বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

স্বদেশ ডেস্ক
  ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত চাষি -যাযাদি

বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে খেজুর রস দিয়ে গুড় তৈরি। তাই খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, শীত যত বাড়ছে নন্দীগ্রামে খেজুরের রসের চাহিদাও ততো বাড়ছে। গ্রামীণ এই জনপদের ঘরে ঘরে খেজুর গাছের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার গাছিরা।

1

সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে খেজুর রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তারা। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন নন্দীগ্রামের গাছিরা। গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখেন রসের জন্য। পরদিন সকালে সেই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন। কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন। উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের এক গাছি জানান, 'শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করি। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভবান হওয়া যায়।'

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে বিভিন্ন গাছির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হেমন্ত, শীত ও বসন্তকালে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এ রস সংগ্রহ করার জন্য আগেই খেজুরগাছ ছাটাই করে হাড়ি লাগানোর জন্য গাছ প্রস্তুত করতে হয়। গ্রাম-বাংলায় পিঠা-পুলিতে খেজুর রস ছাড়া জমেই না। এছাড়া খেজুর রস দিয়ে তরল ও পাটারী গুড়েরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় অসংখ্য খেজুরগাছ রয়েছে।

উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, এখন খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা। শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। তবে খেজুর গাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তাই একসময় হয়তো খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন।

পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি জানান, শীত যত বাড়ছে খেজুর রসের চাহিদাও তত বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস।পাটকেলঘাটা থানার ৫টি ইউনিয়নে রস সংগ্রহে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে চাষিরা কাজের চাপে দম নেওয়ার সময় পান না তারা। খেজুরের রস ও পাটালি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। চাষিরা প্রতিদিন বিকালে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে মাটির ভাড় বা কলসি বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। অনেক চাষি এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন।

চাষিরা জানান, শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গেই তারা রস সংগ্রহ করেন। সরুলিয়া ইউনিয়নের বাইগুনি গ্রামের চাষি আব্দুস সোবহান জানান, 'বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কাঁচা রস ভাড় প্রতি ২০০ টাকা। অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা খেজুর গাছে কোমরে রশি বেঁধে রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে