গত মঙ্গলবার ভোরে বাবার (শাহনেওয়াজ ভূইয়ার) অসুস্থতার কথা বলে শারমীনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান ফারহান ভূইয়া (৩০)। এরপর প্রথমে ছুরি দিয়ে গলা কেটে শারমীনকে হত্যা করেন। এরপর পাশের একটি জমিতে মাথা পুঁতে রাখেন। সবশেষে লাশকে একটি কম্বলে পেঁচিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই পুলিশের কাছে শারমীন হত্যার বর্ণনা দেন গ্রেপ্তার ফারহান ভূইয়া।
তিনি আরও জানান, শারমীন তার মেয়েকে বিয়ে দিতে তাকে তাবিজ করায় তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। তিনি মনে করতেন বিয়ে দিয়ে তাদের সম্পত্তি নিয়ে যাওয়া হবে। তাই এ হত্যা।
ঘাতক ফারহান ভূইয়া রনিকে (৩০) কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন শারমীন বেগম প্রকাশ হরলুজা বেগম-(৪৭)। নিজের বাড়ি না থাকায় ফারহান ভূইয়ার ফুফুর জায়গাতেই পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। শারমীনের স্বামী নূরুল ইসলাম দিন-মজুর। পারিবারিকভাবে ফারহান ভূইয়ার পরিবারের সঙ্গে শারমীনের পরিবারের সর্ম্পক ভালো। এ অবস্থায় শারমীনকে এভাবে পৈচাশিকভাবে হত্যার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার। শারমীনের পরিবারে এখন শোকের মাতম। ঘাতক ফারহানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা।
এ দিকে এ ঘটনায় শারমীন বেগমের বড় মেয়ে রুমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবার জানায়, পুলিশকে দেওয়া ফারহানের বক্তব্য সঠিক নয়। বরং ফারহান চাইতো শারমীনের এক মেয়েকে বিয়ে করতে। কিন্তু ফারহান মাদকাসক্ত হওয়ায় শারমীনের পরিবার রাজি ছিল না। এছাড়া চুরি করা হাঁস রান্না করে দিতে রাজি না হওয়ায় ফারহান এমন নৃশংস হত্যা করতে পারে বলে ধারণা।
শারমীনের বড় মেয়ে রুমা বলেন, চুরি করা হাঁস রান্নার জন্য তার মাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। মা হয়তো এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ কারণে তাকে হত্যা করা হয়।
আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘাতক ফারহান হত্যাকান্ডের কারণ নিয়ে অংসলগ্ন কথা বললেও তবে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উলেস্নখ্য, হত্যাকান্ডের শিকার শারমীন বেগম প্রকাশ হরমুজা বেগম (৪৯) উপজেলার হীরাপুর গ্রামের কলোনি এলাকার নুরুল ইসলামের স্ত্রী। মঙ্গলবার ভোরে ওই নারীকে ডেকে নিয়ে যান ঘাতক ফারহান। চুরি হওয়া হাঁস খুঁজতে গিয়ে স্থানীয়রা ওই নারীকে পুড়তে দেখেন। তাৎক্ষনিকভাবে ফারহানকে আটক করে পুলিশে খবর দেন তারা।