শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রয় কমিটিতে ২২০৫ কোটি টাকার ৮ প্রস্তাব অনুমোদন আগামী বাজেট দরিদ্র মানুষের জন্য :অর্থমন্ত্রী

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য ১টি এবং সংক্রান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সবগুলোয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে দুই হাজার ২০৫ কোটি ১৭ লখ ২ হাজার ৪১৫ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে এক হাজার ৮৮২ কোটি ৬৬ লাখ ২৯ হাজার ৩৩০ টাকা এবং এডিবি ঋণ ৩২২ কোটি ৫০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫ টাকা।

বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৩তম এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে একই মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, গরিব মানুষের জন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদেরকে গরিব থেকে বের করে নিয়ে আসা। যারা অতিরিক্ত গরিব আছে তারা গরিব হবে এবং যারা গরিব আছে তাদেরকে আমরা মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসব। সেভাবেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর গবেষণা করে যদি তারা কোনো তথ্য দিয়ে থাকে সেটা পরিসংখ্যান বু্যরো দেখবেন। তাদের অ্যাসেসমেন্টে আমরা গ্রহণ করব। সেটা এখনো তৈরি হয়নি, হলে আমরা অবশ্যই আপনাদের জানাব।

দরিদ্রদের মূলস্রোতে আনতে বাজেটে বড় একটি বরাদ্দ দরকার, সেক্ষেত্রে নতুন করে সামাজিক সুরক্ষা খাতে বাড়তি কোনো বরাদ্দ রাখবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের আগামী বাজেট নিবেদিত থাকবে এ দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য। এরাই অগ্রাধিকার পাবে। সুতরাং আমরা মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য বাজেটে জায়গা করে দেব।

টিকা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য ওষুধ কিনার বিষয় ছাড়া অন্য কোনো আলোচনায় হয়নি। এর বাইরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রকল্পও উপস্থাপন করা হয়নি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব এসেছিল ১৩ হাজার ৮৮১টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য এসেনসিয়াল ড্রাগস থেকে ওষুধ কিনার। এর বাইরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়নি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য কোনো প্রকল্পও আমাদের সামনে আসেনি।

গত বছর করোনার বিধিনিষেধের সময় দরিদ্রদের অর্থ বিতরণে ঝামেলা হয়েছে, চলতি বছর ৩৫ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের যেসব প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বা পিছিয়ে পড়া জনগণের কথা বলছেন, তাদের যে আইডি কার্ড বা মাধ্যম রয়েছে সেখানে সরাসরি ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেটি ট্রান্সফারের উপযুক্ত থাকে না। সেজন্য একটু বিলম্ব হয়। কিন্তু আমরা কাজগুলো করছি। যাদেরকে আমরা আড়াই হাজার টাকা করে দেব, সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে এই টাকা সরাসরি ট্রান্সফার করা। সরাসরি ট্রান্সফার করতে গেলে সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে। আর একবার যদি সিস্টেমে চলে আসে তাহলে ভবিষ্যতে এর চেয়ে সহজ কাজ আর হবে না। তখন আমরা কম সময়ে অনেক বেশি কাজ করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন সুতরাং এই আড়াই হাজার টাকা বিতরণের কাজ শিগগির শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য আগে যে শর্তগুলো ছিল সেগুলো এবার আমরা পূরণ করে নিয়ে এসেছি। এগুলো একই প্রকল্প। আগেরগুলোর সঙ্গে দেখলে বোঝা যাবে বিভিন্ন জিনিস এনে যুক্ত করতে হয়েছে। যেসব মহাসড়কে আমাদের পরিবহণের জন্য এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব এসেছিল সেগুলো একটার পর একটা অনুমোদন হচ্ছে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত প্রস্তাবটি হলো স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন ২০২০-২১ অর্থবছরে সিটি করপোরেশনসমূহের জন্য আগাছা হারভেস্টার, মডেল : বার্কি ৬৯২৫, জার্মানি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় খুলনা ওয়াসার মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন খুলনা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১২৪ কি.মি. সু্যয়ারেজ পাইপ লাইন, ৩টি সু্যয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন ও ১৩,৮০০টি সার্ভিস কানেকশন নির্মাণকাজ চীন জিও ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের কাছ থেকে ৬৯৬ কোটি ৭৬ লাখ ২৪ হাজার ৭২৭ টাকায় ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আওতায় পেট্রোবাংলার আওতায় কর্তৃক  ভিটল এশিয়া পেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে ৩৩ লক্ষ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি সর্বমোট ২৬৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫১ হাজার ১৭১ টাকায় আমদানির অনুমোদন। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহণের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের প্যাকেজ নং পিডবিস্নউ-২ এর পূর্ত কাজ স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের কাছ থেকে ১৮৮ কোটি ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৬ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডবিস্নউপি-১ এর আওতায় কক্সবাজার হতে উখিয়া ২৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১৩ কোটি ৪৩ লাখ ৩ হাজার ৩৬০ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এবং কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডবিস্নউপি-২ এর আওতায় উখিয়া থেকে উনচিপ্রাং ২৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ১৬ কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৯৮ টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার কর্তৃপক্ষ (সিবিএইচসি) কর্তৃক ২৭ প্রকার ওষুধসম্বলিত ৮০ হাজার ৭৩৪ কার্টন ওষুধ মোট ১৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৫ হাজার ৮২০ টাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডবিস্নউডি-১ এর নির্মাণ কাজ সিআরইসি গেস-১ সিসিসিএল-২, যৌথ উদ্যোগ ঢাকার কাছ থেকে ৪৩৩ কোটি ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ৯০৮ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন। এবং মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডবিস্নউডি-২  এর নির্মাণকাজ (১) সিআরসিসি গেস (২) এমএইচএল-এর যৌথ উদ্যোগের কাছ থেকে ৪৪৮ কোটি ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৯৭৫ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে