শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফোনালাপের সূত্রে ক্লু-লেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন

যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
আপডেট  : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:৪৫

কর্মসংস্থানের অভাবে অপরাধ বাড়ছে। যার অন্যতম কারণ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না থাকা। এ ছাড়া মাদকসহ নানা কারণেও সমাজে বাড়ছে অপরাধ। এজন্য অপরাধের ধরন অনুযায়ী অপরাধীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া কারাগারে বা কারাগারের বাইরে অপরাধীদের ওপর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।

যাত্রাবাড়ীতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে গার্মেন্টস কর্মী খলু মিয়ার ক্লু-লেস হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের পর এমন তথ্য দিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।

হাফিজ আক্তার বলেন, ২২ জানুয়ারি ভোরে যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের পাশে ছুরিকাঘাতে ছিনতাইকারীরা খলু মিয়াকে (২৮) হত্যা করে। হত্যাকান্ডটির কূলকিনারা হচ্ছিল না। ঘটনার চার দিন পর ২৬ জানুয়ারি আরিফ অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে চলে যান। আরিফ কারাগার থেকে তার মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। কথাবার্তায় সন্দেহজনক তথ্য ছিল। সেই তথ্যের সূত্রে আরিফকে (২৮) গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ জানায়, তিনি একটি পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সদস্য। খলু মিয়া হত্যাকান্ডে আরিফ জড়িত বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আরিফ ও তার সহযোগীরা খলু মিয়াকে একা পেয়ে তার সঙ্গে থাকা মালামাল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা খলু মিয়াকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। ছিনতাইকারীরা খলু মিয়ার মোবাইলসহ অন্য মালামাল ও টাকা নিয়ে যায়। স্থানীয়রা ও পুলিশ খলু মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করলে সেখানেই তার মৃতু্য হয়।

ডিআইজি হাফিজ আক্তার জানান, নিহত খলু মিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপসী এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। ঘটনার দিন তিনি গাইবান্ধা থেকে সোনালি পরিবহণে ঢাকায় এসে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টায় গোলাপবাগে নামেন। সেখানে থেকে হেঁটে বাসায় যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। পরে আরিফের তথ্যমতে নিহত খলু মিয়ার ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়। হত্যাকান্ডে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, চব্বিশ ঘণ্টা কর্মব্যস্ত শহর ঢাকা। রাত নামলে অপরাধীরা সক্রিয়া হয়ে ওঠে। এজন্য স্থান ও অপরাধের ধরন অনুযায়ী অপরাধীদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। অপরাধীদের সবসময় নজরদারিতে রাখা সম্ভব হলে অপরাধ কমে আসে। অপরাধীদের ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে নিরাপদ শহর হয়ে ওঠে ঢাকা। তারা যতক্ষণ কারাবন্দি থাকে, তখন অপরাধের পরিমাণও কম হয়। জামিনে বেরিয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, শুধু পুলিশি কার্যক্রম চালিয়ে অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়। অপরাধীদের কারাগারে মানসিকভাবে সংশোধন করা জরুরি। এ ছাড়া তাদের কর্মসংস্থানের প্রয়োজন। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকলে অপরাধ কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে