সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
পঞ্চগড়ে সহিংসতা

হামলা 'পূর্ব পরিকল্পিত' বিএনপির তদন্ত কমিটির দাবি

পুলিশ ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে :মির্জা ফখরুল
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

পঞ্চগড়ের আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত এবং ক্ষমতাসীনদের কাজ বলে দাবি করেছে বিএনপি গঠিত তদন্ত কমিটি। রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কমিটির প্রধান ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ এ কথা জানান। এ সময়ে তিনি ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।

মেজর (অব.)

হাফিজ বলেন, 'হামলায় বা হত্যাকান্ডে যারা অংশগ্রহণ করেছে, লুটতরাজ করেছে তাদের মধ্যে কোনো লজ্জাবোধ নেই এবং লুকিয়ে থাকার কোনো উদ্যোগে তাদের মধ্যে নেই। তারা মহাসমারোহে মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে যাদের ওপর অত্যাচার করেছে তাদের সম্মুখীন হচ্ছেন। এটি হলো সেখানের বাস্তবতা।'

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পঞ্চগড়ের ঘটনার জন্য সরকারকেই অভিযুক্ত করে বলেন, 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যে আন্দোলন চলছে সেই আন্দোলনকে ভিন্নদিকে নেওয়ার জন্য, জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এবং দেশে-বিদেশে বিএনপি সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করতে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এভাবেই সরকার এই সময়টাকে বেছে নিয়ে তাদের লোকজনকে দিয়ে এটা করেছে।

তিনি আরও বলেন, 'এখন পুলিশ সেখানে মারাত্মকভাবে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে ১৮১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কয়েক হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়ে একটা অসৎ উদ্দেশ্যে দূরভিসন্ধিমূলকভাবে তারা এই কাজটা করেছে। এখন সরকার প্রকৃত আসামিদের আড়াল করার জন্য গণভাবে, ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার শুরু করেছে।'

\হমেজর (অব.) হাফিজ বলেন, তাদের তদন্তে ক্ষতিগ্রস্তরা মোতাহার, আবদুর রহমানের মতো ব্যক্তিদের নামও বলেছে। অথচ যে মামলা করা হয়েছে সেই মামলায় তাদের নাম নাই। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন যখন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তখন তাকেও বলেছে, যারা ঘর-বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে তারা তো আপনার সঙ্গেই আছে।

তিনি বলেন, আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সকল মানুষ একটি জায়গায় রয়েছে। এখন তাদেরকে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে বিজেবি, পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করেছি। কিন্তু যখন তাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা গাফিলতি শুনেছি। ওই সময়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ধ্বংসযজ্ঞ অবলোকন করেছে। তখন কোনো বোধদয় হয়নি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

স্থানীয় প্রশাসনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি তথা ডিসি-এসপির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ দেখা করেননি। হাফিজ অভিযোগ করে বলেন, যারা অপরাধ ঘটিয়েছে তাদেরকে ধরা হয় না, ধরা হয় বিএনপির নেতাকর্মীদের। এই ঘটনা থেকে উপলব্ধি করছি যে, যতদিন দেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসবে, আইনের শাসন ফিরে না আসবে, ততদিন এই মানবিক মর্যাদার পুনরুদ্ধার হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউলস্নাহ, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে