সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সীতাকুন্ডে তুলার গুদামে আগুন

নুরউদ্দীন খান সাগর, চট্টগ্রাম
  ১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের কুমিরায় তুলার গুদামে লাগা আগুন ২৪ ঘণ্টা পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রোববার সকাল ১০টায় ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নোবাহিনী, বিমান বাহিনী ও বিজিবির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল আটটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আর আগুন

নেই। তবে কিছুু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠছে। এ কারণে এখনো আগুন নেভানোর কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করেনি ফায়ার সার্ভিস।'

তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, 'ইউনিটেক্স কারখানার গুদামে দুই হাজার ৭শ' টন তুলা ছিল। তুলার পরিমাণ বেশি হওয়ায় এক অংশে আগুন নির্বাপণ করার পর সেটা স্তূপ হয়ে কিছুক্ষণ পর আবার স্তূপের নিচ থেকে আগুন আরেক অংশে ছড়িয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায় ১০ একর আয়তনের এ গুদামের চারদিকের দেয়াল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে চতুর্দিক থেকে ফায়ার টেন্ডার (পানি ছড়ানোর মেশিন) প্রবেশ করানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর চার, নৌবাহিনীর চার, বিমান বাহিনীর দুই এবং বিজিবির চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিটসহ সর্বমোট ২৩টি ইউনিট কাজ করছে।'

তিনি আরও বলেন, 'দুর্ঘটনাস্থলে অগ্নি নির্বাপণে পানি ব্যতীত অন্য কোনো রাসায়নিক বা পাউডার ব্যবহার করার উপায় ছিল না। এমনকি এতো বিপুল পরিমাণ পানির উৎস আশপাশে পাওয়া যায়নি। ফলে অনেক দূর থেকে ক্যান্টনমেন্ট, ভাটিয়ারি, বাড়বকুন্ডসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে পানির জোগান দেওয়া হয়েছে, এখনো দিচ্ছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের খাল, পুকুর ও রিজার্ভারের পানি প্রায় শেষ হয়ে গেছে।'

চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, 'সীতাকুন্ডে তুলার গুদামের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। তবে কিছুু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠছে। এ কারণে এখনো আগুন নেভানোর কাজ সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়নি। ডামপিংয়ের কাজ চলছে।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর উল্টোদিকে এসএল গ্রম্নপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রম্নপের ভাড়ায় নেওয়া একটি তুলার গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ অগ্নি-দুর্ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হবে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস। দিনব্যাপী ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

এর আগে শুকনো তুলায় আগুন ছডিয়ে পড়া ও পানির তীব্র সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হলে রাত এগারোটার দিকে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজে যোগ দেয়।

এদিকে তুলার গুদামে আগুন লাগার কারণ তদন্তে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে প্রধান করে ১০ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির বাকি সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন, চট্টগ্রাম ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সীতাকুন্ড থানার ওসি, বিটিএমসির প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি ও বিটিএমইএর প্রতিনিধি।

এই তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে