সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

হাজীগঞ্জে রোজার আগে মাছ মাংস ও সবজিতে 'আগুন'

এনায়েত মজুমদার, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর)
  ১৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। গত এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। ঊর্ধ্বমুখী গরুর মাংসের ও মাছের বাজারও। রোজার আগেই অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে মাছ ও মাংসের বাজার। আর শীত শেষে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বাড়ছে সবজির দাম। এ অবস্থায় খরচের ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাজীগঞ্জ উপজেলার ভোক্তারা। যদিও এখনো স্থিতিশীল চাল, ডাল, তেলের মতো নিত্যপণ্যের দাম।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বেশির ভাগ মানুষের প্রতিদিনের আয়ের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে মাংস। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার প্রোটিন জোগানকারী মাংস খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন। অনেক পরিবার শুধু বাড়িতে অতিথি এলে নিরুপায় হয়ে মাংস কেনার সাহস দেখায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এই মানুষগুলোর সাধ্যের মধ্যে আর থাকবে না মাংস।

সোমবার হাজীগঞ্জের বিভিন্ন বাজার ঘুরে সরেজমিন দেখা যায়, রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে

বেড়েছে ৪০-৫০ টাকা। গত কয়েকদিন ধরে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ থেকে ২৭৫ টাকায়। সোনালি মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০-৩৪০ টাকায়। এর আগে দেশের বাজারে কখনো মুরগির দাম এত বাড়েনি।

অন্যদিকে হাজীগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস গত সপ্তাহ থেকে ৮০-১০০ টাকা বেড়ে ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া খাসির মাংস এক হাজার টাকা থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, গরু-ছাগল ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হয়েছে। যার কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কম বিক্রি হয়েছে।

একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করেন রাকিবুল ইসলাম। গরুর মাংস কিনতে এসে তিনি বলেন, 'গরুর মাংসের দাম বেড়ে যে পর্যায়ে গেছে, ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরিজীবীদের গরুর মাংস খাওয়ার দিন শেষ। আগে বছরে দুই-একবার খাওয়া গেলেও এখন আর গরুর মাংস কিনে খাওয়ার অবস্থা নেই।'

ভ্যানচালক ফখরুল ইসলাম বলেন, 'মানুষ একটু ভালো খাবার খেতে চায়। আমিও মাংস কিনতে বাজারে গিয়েছিলাম। তবে প্রতিকেজি খাসির মাংস ১১৫০ টাকা, গরুর মাংস ৮৫০ টাকা শুনে না কিনে চলে আসলাম মুরগির দোকানে। মুরগির দাম ২৬৫-২৭৫ টাকা চায়। তাই মাংস না কিনে চলে এলাম।'

হাজীগঞ্জ বাজার হকার্স মার্কেটের গোস্ত বিতানের মালিক বলেন, 'আমি চাই কম দামে গরু ও খাশির মাংস বিক্রি করতে। তবে আমাদের কিছু করার নেই। গরু-ছাগল বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে। যে গরু ৮০ হাজারে কিনেছি গত সপ্তাহে, সেই গরু এক লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। ছাগলেরও একই অবস্থা।' তিনি আরও বলেন, 'গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কম বিক্রি হয়েছে। মানুষ এত অসহায় হয়ে পড়েছে যে, মাংস ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে যে যতটুকু ইচ্ছা, কিনে নিয়েছে। গরুর মাংস ৮৫০ টাকা, খাশির মাংস ১১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি।'

হাজীগঞ্জ বাজার হকার্স মার্কেটের মুরগি ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, 'প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২৬০ টাকায় আর সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। বাজারে ক্রেতার ভিড় ছিল। তবে মুরগির দাম বেশি হওয়ায় না কিনে ফিরে গেছেন অনেকে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে