সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ার দুই শতাধিক ইটভাটা চলছে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া
  ০৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

বগুড়ায় পরিবেশ-সংক্রান্ত ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে দুই শতাধিক ইটভাটা। দুই বছর ধরে বগুড়ার কোনো ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেয়নি বা নবায়ন করেনি। ইটভাটা চালানোর পূর্ব শর্ত হচ্ছে- পরিবেশের ছাড়পত্র। আর এই ছাড়পত্র না থাকলে ইটভাটার লাইসেন্সও থাকে না। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, তাদের ছাড়পত্র না থাকায় বগুড়ার কোনো ইটভাটার আর বৈধতা নেই। জানা গেছে, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তালিকা করে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৯ সালে সংশোধিত হওয়ার পর থেকে বগুড়ায় কোনো ইটভাটা মালিক পরিবেশের ছাড়পত্র নেয়নি। সংশোধিত আইনের শর্ত অনুসরণ করে কোনো ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া ও নবায়নের জন্য আবেদন করেনি। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এসব শর্তের মধ্যে কৃষি জমি, আবাসিক বাণিজ্যিক, পৌর এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাসপাতাল এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। এ ছাড়া ইট তৈরির মাটি মজাপুকুর, খালবিল, নদী, হাওড়, পতিত জায়গা ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে মাটি কাটা যাবে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের অনুমোদনপত্র পরিবেশ ছাড়পত্রের নবায়নের আবেদনে থাকতে হবে।

সূত্র আরও জানায়, বেশির ভাগ ইটভাটা মালিকই এসব শর্ত মানতে রাজি নন। তাদের ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ এলাকার মধ্যে রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, পূর্বে ইটভাটাগুলো ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইনে পরিচালিত হতো। ২০১৩ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন হলে সনাতন পদ্ধতির বেশিরভাগ ইটভাটা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের বাইরে যায়। পরে ২০১৯ সালে সংশোধিত আইন হলে সংশোধিত শর্ত মেনে বগুড়ায় আর কেউ নতুন ইটভাটার জন্য বা পূর্বে নেওয়া পরিবেশের ছাড়পত্র নবায়নের জন্য আবেদন করেনি।

সূত্র জনায়, বগুড়ায় বর্তমানে ২৩৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর বাইরে গত দুই বছরে পৌর এলাকা থেকে ২৬টি ইটভাটা অপসারণ করা হয়েছে। তবে বর্তমান চালু থাকা কোনো ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই অথবা নবায়ন করা হয়নি।

পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সুফিয়া নাজিম জানান, ইট প্রস্তত সংশোধিত আইন মেনে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য কোনো ইটভাটা পরিবেশ ছাড়পত্র বা ছাড়পত্র নবায়নের জন্য আবেদন করেনি। এ কারণে বগুড়ার সব ইটভাটাই অবৈধ। এসব অবৈধ ইটভাটার তালিকা প্রণয়ন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আইন অনুাযায়ী যথাথথ শর্ত মেনে পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন না করা হলে ছাড়পত্র নবায়ন করা হবে না।

বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক জানান, পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া অবৈধভাবে ইটভাটা চালালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে বগুড়া ইট প্রস্তুত মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বগুড়ার কোনো ইটভাটার বৈধতা না থাকার কথা স্বীকার করে জানান, আইনের শর্ত অনুযায়ী তারা ইটভাটা স্থাপন বা লাইসেন্সের জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র নিতে পারবেন না। এ জন্য শিথিলের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান আইনে শুধু বগুড়া নয়; দেশের কোনো স্থানের ইটভাটাই পরিবেশের জন্য উপযুক্ত নয় এবং কারও পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। আইন অনুযায়ী, প্রশাসন ইটভাটা অপসারণ করলে তাদের করার কিছু নেই বলেও তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে