সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
বিএনপির মহাসমাবেশ

কর্মসূচির নামে নাশকতার চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন

এমআরটি পুলিশের নিরাপত্তা পরিদর্শনকালে ডিএমপি কমিশনার
যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা কর্মসূচির আড়ালে নাশকতার চেষ্টা করা হলে, তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কারণ, ঢাকার প্রায় সোয়া দুই কোটি জনগণের নিরাপত্তা সবার আগে। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না।

শনিবার বেলা ১১টায় মেট্রোরেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব পাওয়া এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে যান তিনি। ডিএমপি কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা আগারগাঁও স্টেশন থেকে মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরার শেষ স্টেশন পর্যন্ত যান। পুরো রাস্তায় এমআরটি পুলিশের নিরাপত্তা-বিষয়ক

কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন এমআরটি পুলিশকে।

উত্তরায় মেট্রোরেল স্টেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বৈধ রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করার অধিকার আছে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ এ ধরনের সমাবেশের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে থাকে। শান্তিপূর্ণভাবে কোনো রাজনৈতিক দল যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে অবশ্যই পুলিশ সহযোগিতা করবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও বলেন, তবে রাজনৈতিক কর্মসূচির আড়ালে কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা করে, তাহলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ, ঢাকায় বসবাসকারী প্রায় সোয়া দুই কোটি মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি সবার আগে দেখা হবে। নগরবাসীর জানমাল রক্ষার্থে কোনো ধরনের আপস করা হবে না। আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার বিএনপির তরফ থেকে ডাকা মহাসমাবেশেও যদি এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে তা অত্যন্ত শক্তহাতে প্রতিহত করা হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এতে করে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষের মধ্যে বাড়তি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়াচ্ছে। শুধু ২৮ অক্টোবর ঘিরেই নয়, অন্য বিষয়েও ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা হচ্ছে। গুজব ঠেকাতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি সামাজিকভাবেও গুজবকে প্রতিহত করতে মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, সমাবেশকে ঘিরে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থাসহ অন্য গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই অতীতের মতো ভবিষ্যতেও যে কোনো ধরনের গুজব বা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এমআরটি পুলিশের নিরাপত্তার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মেট্রোরেলের (ম্যাস র?্যাপিড ট্রানজিট-এমআরটি) কার্যক্রম শুরুর পর থেকেই পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সোয়া ২১ কিলোমিটার রেলপথে ১৭টি স্টেশন রয়েছে। বর্তমানে ৯টি স্টেশনের দায়িত্ব পালন করছে এমআরটি। আগামী ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চালু হবে স্টেশনগুলোও। তখন পুরো মেট্রোরেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব বুঝে নিবে এমআরটি পুলিশ।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৪ মে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষায়িত মেট্রোরেল পুলিশ গঠনের অনুমোদন দেয় সরকার। পুলিশের একজন উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) নেতৃত্বে ২৩১ জনবল নিয়ে কার্যক্রম চলছে এমআরটি পুলিশের। এমআরটি পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডিআইজি জিহাদুল কবির। রয়েছেন পুলিশ সুপার রেজাউল ইসলাম। এমআরটি পুলিশে আরও ২০০ জনবল যুক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জনবল সংখ্যা বর্তমানে ৪৩১ জন। মেট্রোরেলের কাজ শুরুর পর থেকেই ডিএমপির ৫৬০ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করে আসছে। উত্তরার দিয়াবাড়ি মেট্রোরেলের ডিপোতে এমআরটি পুলিশের কার্যালয় ঠিক করা হয়েছে। তবে এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম এখনো পুলিশ সদর দপ্তর থেকেই পরিচালিত হচ্ছে। এমআরটি পুলিশ আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার এইচএম আজিমুল হক ও মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার জসীম উদ্দিন মোলস্নাসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে