বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

কয়রায় জলাবদ্ধতা ও বাঁধ সুরক্ষা প্রধান সমস্যা

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
  ২১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪০
কয়রায় জলাবদ্ধতা ও বাঁধ সুরক্ষা প্রধান সমস্যা

খুলনার কয়রায় প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা ও বাঁধ সুরক্ষা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ সমস্যা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি উপকূলীয় রক্ষা বাঁধ ভেঙে নদীর পানি উপচিয়ে এলাকা পস্নাবিত হওয়া এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এলাকার লাখ লাখ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

এলাকার মানুষের মনে এখন প্রশ্ন উঠছে, এ এলাকায় আদৌ কি বসবাস করা যাবে। এবং কিভাবে তারা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করবে। এ সমস্যার কারণে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এবং জর্জরিত জনগোষ্ঠী হলো দরিদ্র ও দুস্থ মানুষ। এদের মধ্যে দরিদ্র মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধীদের ভোগান্তির শেষ নেই।

1

২০০৪ সাল থেকে সুনামি, সিডর, বিজলি, রেশমি, আইলা, নার্গিস, মহাসেন, বুলবুল, আম্ফান, ফণি, রেমালসহ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ভয়াল রূপ দেখে এ এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কিত। অন্যদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময় জোয়ারের উচ্চতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে অনেক এলাকা বাঁধ ভেঙে বা নদীর পানি উপচিয়ে এলাকা পস্নাবিত হচ্ছে।

বর্ষাকালে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক উঁচু থাকে। এ সময় উজান অঞ্চলের পানির চাপ ও বাতাসের তোড়ে নদীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। পানির উচ্চত বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরে ভাঙন দেখা দেয়। অন্যদিকে পানি সরবরাহের খাল পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে এবং বাকি খালগুলো সরকারিভাবে ইজারা দেওয়ায় পানি সঠিকভাবে সরবরাহ হতে পারে না। এ কারণে অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

কয়রা উপজেলা ভূমি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আ ব ম আব্দুল মালেক বলেন, 'ভরাট হয়ে যাওয়া খালগুলো খনন করে পানি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করলেই এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।'

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, 'উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন সময় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সহায়তার আওতায় আসেনি এবং যে বাঁধগুলো মেরামত হয়নি সেগুলোর বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা চিন্তা করে দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি গ্রহণ এবং উপকূলীয় বাঁধ উঁচু ও মজবুত করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে দুর্যোগে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নির্মাণ করা হয়েছে। এবং টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যার কাজ চলমান রয়েছে।

খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত কারণে এ সমস্যা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে সরকার খাল ও নদী খননের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এবং উপকূলীয় জনপদ কয়রা উপজেলার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। যার কাজ চলমান রয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে