শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ ভাগ কোটা পুনর্বহাল চান মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল না করা হলে কঠোর আন্দোলন ও উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলে কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
সরকারি চাকরিতে ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সংগঠন -সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে ৩০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সংগঠন 'মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম'।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে এ দাবি জানায়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় উত্থাপিত ছয় দফা দাবিগুলো হলো: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি সব চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল, সংরক্ষণ, বিশেষ কমিশন গঠন করে প্রিলিমিনারি থেকে শতভাগ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষিত পদগুলো বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো সব পদে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পারিবারিক সুরক্ষা আইন, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে বিশেষায়িত মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতাল নির্মাণ এবং তাদের কল্যাণে মুক্তিযোদ্ধা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে হবে ও দ্রম্নত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। রাজাকারসহ স্বাধীনতাবিরোধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, তাদের বংশধরদের সরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ও নিয়োগে অযোগ্য ঘোষণা এবং চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকরিচু্যত করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সব ধরনের অপপ্রচার বন্ধ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে স্বঘোষিত রাজাকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে হামলাসহ সব ধরনের অরাজকতা সৃষ্টিকারী স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি সব চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মের বয়সসীমা ৩৫ করতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা জানান, সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ১০ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখে মন্ত্রিপরিষদে পাঠানোর জন্য যে মতামত ব্যক্ত করেছেন, তার বিরোধিতা করে এই সমাবেশ। যাদের রক্তের ওপর দিয়ে এ দেশের মানচিত্র ও লাল-সবুজের পতাকা রচিত হয়েছে, তাদের সম্মান করে জাতির পিতা মুক্তিযোদ্ধা কোটা দিয়েছেন। কিন্তু কূটকৌশলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে রেখে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান, অসম্মান এবং হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে, যা গভীর ষড়যন্ত্র।

বক্তাদের অভিযোগ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিলে মানুষ হাসাহাসি করে, লাঞ্ছিত হতে হয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষেপিয়ে তোলা হয়েছে।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সব শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল না করা হলে কঠোর আন্দোলন ও উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলে কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ার দেওয়া হয়।

'মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম'র কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম তুষারে সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন রূপনগর থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মোলস্না, মুক্তিযোদ্ধা পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি ফজলে রাব্বী রানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা আবদুলস্নাহ আল মামুন সোহাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে