রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ

অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

শিক্ষক সমিতি তার এ ন্যক্কারজনক ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে গ্রন্থটি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডক্টর জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শুক্রবার এ দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতি বলেছে, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ, তার লেখা বইয়ে (শিরোনাম : হিস্টোরিসাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড স্টেট ভার্সেস পারসন) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ ভাষণ শেষে ''জয় বাংলা''র সঙ্গে ''জয় পাকিস্তান'' বলেছেন- বলে দাবি করেছেন (পৃ. ৮০)।'

এছাড়াও একই বইয়ে 'একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে অযথা বিতর্কের অবতারণা করেছেন (পৃ. ১৫ ও ১৬) ও ১৯৭১-এর গণহত্যার বিচার না হওয়ার পেছনে বিভিন্নভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার সরকারকে দায়ী করেছেন (পৃ. ১২, ১৩) এবং একাত্তরের গণহত্যার বিচারের ক্ষেত্রে ওই সময়ে বাঙালিদের দ্বারা বিহারিদের হত্যার বিচার করা উচিত বলে দাবি করেছেন (পৃ. ৮১-৮২)।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'শিক্ষক সমিতি তার এ ন্যক্কারজনক ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই গ্রন্থটি ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে। শিক্ষক সমিতি মনে করে, উপরোক্ত বিষয়গুলো ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় ও অ্যাকাডেমিকভাবে সুরাহা হয়েছে। এগুলো নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরির সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ যেটি তিনি সমাপ্ত করেছিলেন ''জয় বাংলা'' বলে সেই ভাষণটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃত।'

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, 'জোনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ যে ''জয় পাকিস্তান'' সেস্নাগানের কথা বলছেন তা একদিকে যেমন ইতিহাস বিকৃতির অকাট্য প্রমাণ ঠিক একইভাবে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বীকৃত জয় বাংলা সম্বলিত বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটিকে চ্যালেঞ্জ করণের অপচেষ্টা।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'এ দেশে একমাত্র '৭১-এর পরাজিত শক্তিই উপরোক্ত নিষ্পত্তিকৃত বিষয়সমূহ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিতর্কিত করা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা করে। অধ্যাপক ইমতিয়াজ তার গ্রন্থে একই অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে '৭১-এর পরাজিত শক্তির দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তাকে অনতিবিলম্বে জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টারের পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান ও তার গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পন্ডিত শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি প্রণয়নের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষক সমিতি অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বইয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে