আজকের যায়যায়দিন

ওয়ানডে বিশ্বকাপ মহাযজ্ঞ আর মাত্র ৯৯ দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে। অনেক অপেক্ষা ও আলোচনা-সমালোচনার পর অবশেষে মঙ্গলবার ২০২৩ বিশ্বকাপের সূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে আইসিসি। যেখানে গ্রম্নপপর্বে নিজেদের প্রথম

ম্যাচে আগামী ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতের ৬ ভেনু্যতে ৯টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দুটি করে ম্যাচ আছে ধর্মশালা, পুনে ও কলকাতায়। এছাড়া চেন্নাই, মুম্বাই ও দিলিস্নতে অপর তিন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ৭ অক্টোবর ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হবে। ১২ নভেম্বর পুনেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ খেলবে নিজেদের শেষ ম্যাচ।

এছাড়া প্রতিযোগিতা শুরুর আগে গৌহাটি বা তিরুবনন্তপুরমে প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্ট চলাকালীন এই শহর থেকে ওই শহরে প্রচুর ভ্রমণ করা লাগবে বাংলাদেশের। অবশ্য সব দলের জন্যই প্রায় একই সূচি করেছে আয়োজকরা।

নারী আম্পায়ার নয়, দুই ক্লাবের আপত্তি অভিজ্ঞতায়

মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলেন সূচি ঘোষণা করা হয়। নিজেদের সূচি ও টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আসন্ন এই বৈশ্বিক আসরে নিজের দল নিয়ে বেশ আশাবাদী লাল-সবুজের কাপ্তান তামিম ইকবাল। আর এই দল নিয়েই বিশ্বমঞ্চে লড়াইয়ের প্রত্যাশা তামিমের।

তামিম বলেছেন, 'এটা সবচেয়ে বড় আয়োজন। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। কারণ, সাদা বলের এই প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত আপনার ম্যাচ সচেতনতা ও ধৈর্যর পরীক্ষা নেবে।'

চার বছরে দেশের ক্রিকেটের মান বেড়েছে। আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে তিনে থেকে বাংলাদেশ শেষ করেছে। সরাসরি খেলতে পারছে বিশ্বকাপ। এবার প্রস্তুতি আরও জমাট এবং অভিজ্ঞতা আগে থেকে বেড়েছে। নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়ার বড় সুযোগ দেখছেন তামিম।

আইসিসির সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ দলপতি জানালেন, 'যে দলটি নিয়ে আমরা বিশ্বকাপে যাব, তাদের নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। ওয়ানডেতে আমরা দুর্দান্ত পারফর্ম করছি এবং ওয়ানডে সুপার লিগে আমরা অন্যতম সেরা দল ছিলাম। অভিজ্ঞতা ও প্রতিভার মিশ্রণে আমরা ভালো একটি দল, কন্ডিশনও আমাদের পরিচিত।'

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'ভারতে খেলা সব সময়ই আনন্দের। মাঠের উন্মাদনা, দুর্দান্ত স্টেডিয়াম এবং জ্ঞানী ক্রিকেট ভক্তরা অভিজ্ঞতাকে পরিপূর্ণ করে তোলে। আমরা সব সময়ই সেখানে খেলে ভালো সমর্থন পেয়ে থাকি।' - যোগ করেন তামিম।

তবে বিশ্বমঞ্চের এই লড়াইয়ে কোনো দলকেই সহজ বলতে নারাজ দেশসেরা এই ওপেনার। তার (তামিম) ভাষ্য, 'টুর্নামেন্টের কাঠামো আপনাকে স্বস্তিতে থাকার সুযোগ দেয় না। প্রতিটি দলই কঠিন প্রতিপক্ষ, কোনো খেলাই সহজ হবে না।'

এই সংস্করণকে সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক হিসেবেই দেখছেন লাল-সবুজের এই প্রতিনিধি। তামিমের মতে, 'এটাই আল্টিমেট ইভেন্ট। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সঙ্গে আরও কিছুর তুলনা হয় না। কারণ, সাদা বলের ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ফরম্যাট। যা ক্রমাগত আপনার খেলার প্রতি সচেতনতা এবং টেম্পারমেন্টের পরীক্ষা নেবে।'

২০১৯ বিশ্বকাপে বড় স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এরপর জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও। কিন্তু শ্রীলংকার সঙ্গে বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর সুযোগ হারানোর সঙ্গে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে পেরে না উঠায় সেমিফাইনাল খেলা হয় না বাংলাদেশের।

৪৬ দিনের এই প্রতিযোগিতার জন্য ৮ দল সরাসরি নির্বাচিত হয়েছে। দুটি দল বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসবে। রাউন্ড রবিন লিগে মোট ৪৫ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে দিনের খেলা আছে ছয়টি। যেগুলো বাংলাদেশ সময় ১১টায় শুরু হবে। এছাড়া বাকি ৩৯ ম্যাচ হবে দিবারাত্রির। বাংলাদেশ সময় আড়াইটায় সেসব ম্যাচ শুরু হবে। বাংলাদেশ কেবল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পুনেতে একটি ম্যাচ দিনে খেলবে। বাকি সব ম্যাচ দিবারাত্রির।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন। বৈশ্বিক এই মহাযজ্ঞের আগে একমাত্র সিরিজ টাইগারদের এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই। আগামী মাসে আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি২০ ফরম্যাটের সিরিজে মাঠে নামবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া আসন্ন এশিয়া কাপে তো রয়েছে একাধিকবার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাও।

বিশ্বকাপের আগেই নিশ্চিতভাবে ছয়বার আফগানদের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আর সে কারণেই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য যেমন স্বস্তির তেমন আবার আতঙ্কের বিষয়ও।

স্বস্তি আর আতঙ্ক দুটোর কারণ একই। দুই দলই তাদের শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা সম্পর্কে আগে থেকেই থাকবে অবগত। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল এমনটাই মনে করছেন।

তামিম বলেন, 'আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ হওয়ার একটি ভালো দিক হলো, সামনে ওদের সঙ্গে আমরা চার-পাঁচটি ম্যাচ খেলব। ওদের সম্পর্কে বিস্তারিত সব ধারণা আমাদের থাকবে। তবে ওরাও আমাদের সম্পর্কে জানবে। সেই জানাশোনা কে মাঠে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে, সেটিই হবে আসল। আমরা অবশ্যই চাইব শুরুটা ভালো করতে।'