শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীনে ক্ষুদ্র ব্যাংকগুলোর দুর্দশা আরও বাড়ছে

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারা বিশ্বেই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় ব্যাপক ধস নেমেছে। চীনেও এর ব্যতিক্রম নয়। আয় কমে যাওয়া অথবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে অনেক প্রতিষ্ঠানই ব্যাংকঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। করপোরেট ঋণখেলাপির হার বেড়ে যাওয়ায় দেশটির আর্থিক খাতের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আন্তঃব্যাংক ঋণবাজারের চলমান দুর্দশাই তার প্রমাণ। চীনের বেশকিছু ক্ষুদ্র ব্যাংককে এখন নিজেদের মধ্যে ঋণ আদান-প্রদান করতে গিয়ে অপরিসীম প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে। খবর বস্নুমবার্গ।

যেকোনো দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যাংকগুলোর জন্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে স্বল্পমেয়াদি বিশেষ করে এক বছর মেয়াদি আন্তঃব্যাংক ঋণ। চীনে বর্তমানে এ ঋণে সুদের হার ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশে অবস্থান করছে, যা গত এপ্রিলের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়া এই আন্তঃব্যাংক সুদের হার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপল'স ব্যাংক অব চায়নার (পিবিওসি) মধ্যমেয়াদি ঋণে সুদের হারের চেয়ে ৩৯ বেসিস পয়েন্ট বেশি। ২০১৮ সালের জুলাইয়ের পর এ দুই সুদের হারে এত পার্থক্য আর কখনো দেখা যায়নি।

চীনের ক্ষুদ্র ব্যাংকগুলো তাদের তারল্য ঘাটতি মেটানোর ক্ষেত্রে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে নগদ অর্থ সরবরাহ করে, তাতে ক্ষুদ্র ব্যাংকগুলোর সরাসরি প্রবেশাধিকার থাকে না। এই অর্থ পেতে গেলে বৃহৎ ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এগোতে হয় তাদের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু হাই-প্রোফাইল ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় বৃহৎ ব্যাংকগুলো এখন তহবিল সরবরাহের ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান ও বীমা কোম্পানিগুলোকেও স্বল্পমেয়াদি ঋণবাজারের এই অনিশ্চয়তার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

গত সপ্তাহে প্রতিদিনই স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে তারল্য সরবরাহ করেছে পিবিওসি। চলতি সপ্তাহের সোমবারেও ৩ হাজার কোটি ডলারের নগদ অর্থ বাজারে সরবরাহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু তাদের এই উদ্যোগ চীনের আর্থিক খাতের সবচেয়ে ভঙ্‌গুর অংশকে খুব একটা সহায়তা করতে পারছে না।

আরেকটি উদ্বেগের বিষয় রয়েছে ক্ষুদ্র ব্যাংক, ব্রোকারেজ ও বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য। কভিড-১৯ মহামারির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলার জন্য যে জরুরি সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক, তাতে শিগগিরই ইতি টানতে পারে তারা। চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানই হয়তো তাদের এ পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করবে। নভেম্বরে দেশটিতে শিল্পোৎপাদন প্রত্যাশাতীত গতিতে বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রণোদনা প্রবাহ যে শুকিয়ে যেতে পারে, তার আভাস এরই মধ্যে দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এক শীর্ষ নির্বাহী। গত মাসে পিবিওসির ভাইস গভর্নর লিউ জুওকিয়াং বলেছিলেন, 'মুদ্রানীতি শিথিলীকরণ থেকে প্রত্যাবর্তন এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। আর এর প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে