সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মন্দায় কেটেছে বছরের শেষ সপ্তাহ

যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

পুঁজিবাজারে বছরের শেষ সপ্তাহটি মন্দাবস্থায় কেটেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে লেনদেন। ৫২.০৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। সূচকও হারিয়েছে শেষ সপ্তাহে। টাকায় ৩১ শতাংশেরও বেশি লেনদেন কমেছে।

ইতিবাচক হলো ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ। ৭ হাজার ৮৯ কোটি টাকা ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে। বড় সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত থাকায় অনেক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ আটকা পড়ে আছে। তারা ওই সব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করতে পারছে না। অপরিবর্তিত শেয়ার দর ও ফ্লোর প্রাইজের (সর্বনিম্ন দর) বৃত্তে আটকা অনেক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ।

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪০৫টি কোম্পনির মধ্যে দর বৃদ্ধিতে ছিল মাত্র ৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। আর মূল্য পতনের শিকার হয়েছে ৮৩টি কোম্পানির শেয়ার। তবে এটা আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। ৫২.০৯ শতাংশ বা ২১১টি কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিতই রয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়নি ২৫টি কোম্পানি। আর মূল্য সূচক ডিএসই-৩০ কমেছে ০.৭৫ পয়েন্ট, ডিএসইএক্স ২.৭৯ পয়েন্ট এবং শরীয়াহ্‌ সূচক কমেছে ১.৩১ পয়েন্ট।

পুরো সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে টাকায় লেনদেন কমেছে ৩১.১৩ শতাংশ। যেখানে আগের সপ্তাহে মোট ২ হাজার ৯২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে। সেখানে সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ কার্যসপ্তাহে কমে ২ হাজার ১৬ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচু্যয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। অন্যদিকে, প্রতিদিন গড়ে টাকায় লেনদেন কমেছে ১৩.৯ শতাংশ। যেখানে ৫৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার বেচাকেনা হতো, সেটা গেল সপ্তাহে কমে হয়েছে ৫০৪ কোটি ১১ লাখ টাকায়। শেয়ার বিক্রি বা ছেড়ে দেওয়ার চাপ থাকার পরও আগের সপ্তাহের তুলনায় গেল সপ্তাহে কমেছে ৪০.৪৯ শতাংশ। ৬৭ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার ৭১৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড গত সপ্তাহে হাতবদল হয়েছে। কিন্তু তার আগের সপ্তাহে এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১১৪ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার ৩৪০টি। কমেছে শেয়ার প্রতি আয় বা পিই। আগের সপ্তাহের ১৩.১৬ থেকে কমে গত সপ্তাহে ১৩.১২ তে এসেছে। ডিএসইর বাজার মূলধন সপ্তাহ শেষে ০.৯২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৪৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের নেতৃত্বে ওঠে এসেছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড। সপ্তাহের চার কর্মদিবসে কোম্পানিটির ২৫ লাখ ২৮ হাজার ৩৭০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১০২ কোটি ৩৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা- যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৫.০৮ শতাংশ।

লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড। চার কর্মদিবসে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার ৯৫৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১০০ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা- যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৫.০১ শতাংশ।

তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল রিসোর্ট লিমিটেড। চার কর্মদিবসে কোম্পানিটির ৯১ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৯২ কোটি ১৭ লাখ ১০ হাজার টাকা- যা ছিল ডিএসইর লেনদেনের ৪.৫৭ শতাংশ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে অলিম্পিক এক্সেসরিজের ৮৬ কোটি ৮৬ লাখ ১০ হাজার টাকা, খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের ৭৬ কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা, সেন্ট্রাল ফার্মার ৫৭ কোটি ৭১ লাখ ৩০ হাজার টাকার, ইন্ট্রাকো সিএনজির ৫৩ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার, রূপালী লাইফের ৪৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার, প্রাইম ফাস্ট মিউচু্যয়াল ফান্ডের ৩৬ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং প্যাসেফিক ডেনিমসের ৩৫ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩১.৬০ শতাংশ। সপ্তাহের চার কর্মদিবসে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আইসিবি এমসিএল সিএমসিএফ জুবিলী মিউচু্যয়াল ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে ২৭.৩৫ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক ফাস্ট আইসিবি এমসিএল মিউচু্যয়াল ফান্ডের ২০.৭৮ শতাংশ, আইসিবি এমসিএল সোনালী ব্যাংক ফাস্ট মিউচু্যয়াল ফান্ডের ২০.৫১ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফাস্ট মিউচু্যয়াল ফান্ডের ১৪.৫৪ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১৩.৭২ শতাংশ, রূপালী লাইফের ১৩.৩৩ শতাংশ, ইন্ট্রাকো সিএনজির ১৩.১৩ শতাংশ, আইসিবি এমপস্নয়িজ প্রভিডেন্ড মিউচু্যয়াল ফান্ডের ১১.২৭ শতাংশ এবং আইএফআইএল মিউচু্যয়াল ফান্ডের ৯.৩৭ শতাংশ।

বিদায়ী সপ্তাহের চার কর্মদিবসে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে লিবরা ইনফিউশনের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৩৬.৮২ শতাংশ। সাপ্তাহিক চার কর্মদিবসে দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জেমিনি সি ফুডের দর কমেছে ৩৬.৮৫ শতাংশ, সি পার্ল রিসোর্টের ১৯.৬০ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ১৩.০৮ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ১২.৬০ শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের ১১.৯৪ শতাংশ, ক্যাপিটাক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১১.১১ শতাংশ, এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডের ৯.৭৩ শতাংশ, বিচ হ্যাচারির ৯ শতাংশ এবং ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ৮.৭০ শতাংশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে