শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রা শুরু করেছে জাদুঘর

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৪৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুক্তিযুদ্ধ, জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে জাদুঘর। বিষয়টি উচ্ছসিত জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও সংস্কৃতিসেবীরা আনন্দিত।

জাদুঘরটিতে স্থান পেয়েছে মহান স্বাধীনতার সময়ের রেডিও, গ্রামোফোন রেকর্ড, মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি, ডাক বিভাগের খাম, ১৮৮০ সালের ইংল্যান্ডের মুদ্রা, টেলিফোন, টাইপ মেশিন, ১৯৭০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আওয়ামীলীগের নেতাদের সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রæপ ছবি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ছবি, ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ, রওশন আরা অন্নপূর্না খাঁ, বিপ্লবী উল্লাস কর দত্তসহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অসংখ্য ছবি।

গত ১৩ জানুয়ারি শেষ কর্মদিবসে জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন বিদায়ী জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন। বিদায়ী জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই জাদুঘরটি নির্মিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের প্রথমার্ধে পরিত্যক্ত হয়ে থাকা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে অবস্থিত সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) অফিসটি সংস্কার করে জাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। পরে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের টিআর ও জেলা প্রশাসকের বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যায়ে ওই ভবনে জাদুঘরটি নির্মান করা হয়।

সরজমিনে ওই জাদুঘরের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় সামনে মাঠ। চারপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মাঝখানে দক্ষিণপাশে পাকা ভবন। ভবনের সামনে লেখা “ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জাদুঘর”। ভেতরে অভ্যর্থনা কক্ষ, পাশেই তিনটি কক্ষ। প্রথম কক্ষের উপর লেখা মুক্তিযুদ্ধ, দ্বিতীয় কক্ষে ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং তৃতীয় কক্ষে সংস্কৃতি লেখা রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের কক্ষে ১৯৭০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বক্তব্য রাখার সময় বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ছবিসহ মুক্তিযুদ্ধের অনেক ছবি।

দ্বিতীয় কক্ষে জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি, নৌকাবাইচ, আঁচিল বা হাঁসলি মোরগ, হাতীর পুল, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া গ্রামোফোন রেকর্ড, টেলিফোন, টাইপ মেশিন, পুরানো মুদ্রা, পিতলের জিনিসপত্রের ছবি এবং তৃতীয় কক্ষে আছে ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ, অন্নপূর্না খাঁ, প্রয়াত হরলাল রায়, অদ্বৈত মল্ল বর্মনের ছবি।

এ ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, লেখক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে আমাদের দাবি ছিলো জেলায় একটি জাদুঘর নির্মানের। কিন্তু কেউই যাদুঘর নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেনি। বিদায়ী জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন এই যাদুঘরটি নির্মান করায় তাকে ধন্যবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহবায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, এই জাদুঘরটি নির্মিত হওয়ায় পরবর্তী প্রজন্ম জেলার মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিষয়গুলো জানতে পারবে। এই জাদুঘরটি আরো সমৃদ্ধ করতে হবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ১ একর জায়গায় প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যায়ে এই জাদুঘরটি নির্মান করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিদায়ী জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির দিক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ন। জাদুঘরের কারনে জেলার মানুষ ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে