রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিবচরে কাশফুলের শুভ্রতায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

এস.এম. দেলোয়ার হোসাইন, শিবচর (মাদারীপুর)
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৪৩

বৈচিত্র্যময় দেশ আমদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। ঋতু বৈচিত্রের এই দেশে ‘ঋতুর বৈচিত্র্য’ অনুভব করতে গ্রামবাংলার প্রকৃতির কোনো বিকল্প নেই। যদিও দিন দিন সেই বৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে। শীত এবং বর্ষাকাল স্পষ্টভাবে বোঝা গেলেও অন্যান্য ঋতুর বৈচিত্র্য খুব একটা দেখা যায় না। তবে নদ-নদীর চর এলাকা, বিরানভ‚মিতে কাশফুল (কাশিয়া) ফুটলেই বোঝা যায় শরৎ এসেছে!

শিবচরে নদ-নদী ও চরাঞ্চলে বির্স্তীণ কাশবন (কাশিয়া) হয়ে উঠেছে প্রকৃতি প্রেমীদের বিনোদন স্থল। নয়ণ জুড়ানো ধরলার তীরে কাশফুলের শুভ্রকায় বিমোহিত প্রকৃতি প্রেমী তরুণ-তরুণীরা মনের আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পদ্মার বেরি বাধ থেকে দেখে মন হয় যেন সাদা চাদরে মোড়ানো চরাঞ্চল। কাশফুলের শুভ্রতা, স্বপ্নের পদ্মাসেতু আর নদীর কলতানে প্রকৃতির এক অপার লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে চরাঞ্চলটি।

উপজেলার চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি, বন্দরখোলা, সন্যাসীর চর ইউনিয়নে পদ্মা ও আড়িয়াল কা নদীর তীরে ধু-ধু বালুচরের মধ্যে বিভিন্ন বির্স্তীণ উচু জায়গা জুড়ে আপন মনে ফুটেছে শরতের দাদা কাশফুল। কাশফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত পুড়ো মাঠ জুড়ে। প্রতিদিন বিকাল হলেই শতশত দর্শনার্থী পদ্মাসেতু দেখতে এসে সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের পূর্ব-পশ্চিম পাশে স্বপ্নের কাশফুলের বাগানে গিয়ে আনন্দ উপভোগ করে।

পদ্মাসেতুর দক্ষিণ প্রান্তের পশ্চিম পার্শ্বে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীর তীরে কাশফুলের বাগানে চারিদিকে শুধু থৈ-থৈ পানি আর পানি। চর ভর্তি পানি থাকা সত্তে¡ও কাশবনের সুভাস পেতে আপন মনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউবা নদীর কোল ঘেঁষে নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে উপভোগ করছেন কাশবনের সৌন্দর্য। কেউবা কাশফুলের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজেকে ক্যামেরাবন্দী করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান পরিবারের লোকজন নিয়ে দলে দলে আসছেন কাশফুল দেখতে। প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলা।

পাশ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আসা জুবায়ের রহমান, আল-আমিন ও আরিফজ্জামান জানান, পদ্মাসেতুর পাশে চর তীরে সুন্দর একটি কাশফুলের বাগান দেখার খুব ইচ্ছা, তাই আজ দেখতে এসেছি। আমরা ভাবতেই পারিনি এতো সুন্দর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করবো। কল্পনার বাহিরে যে এতো ভাল লাগলো। এতো সুন্দর পরিবেশে সাদা কাশফুল আর নীল সবুজ আকাশ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। দৃশ্য গুলো স্মৃতি হয়ে থাকবে।

বরহামগঞ্জ সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী জিম আক্তার বলেন, কাশফুলের প্রেমে পড়ে অনেক কবি যেমন কবিতা লিখেছেন, শিল্পী তেমন তার তুলিতে একেঁছে কাশফুলের ছবি। হয়েছে অনেক গান। উপশহরের কাশফুল আমাকে বিমোহিত করে আর বিমোহিত হয়েই শুভ্রতার টানে আসি।

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুলের মধ্যে কাশফুল অন্যতম। বাংলাদেশের সব নদ-নদীর র্তীওে প্রাকৃতিক জলাশয়ের ধারে বেশি কাশফুল জন্মে। কাশবন শুধু প্রকৃতি প্রেমীদের মনে তৃপ্তি মিঠাই না। এ কাশবন (কাশিয়া) দিয়ে নদী ভাঙন রক্ষা পায়। সেই সাথে কাশবন (কাশিয়া) আগের মানুষ ঘর-তৈরী করতো এবং এখন পানের বরে ছাউনি, সেই সাথে রান্নার জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। কাশফুল বিক্রি করে বড় আয়ের স্বপ্ন শিবচর উপজেলার চরের কৃষকের। প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা ঘাস অনেক চরের মানুষের জন্য স্বচ্ছলতা নিয়ে আসছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে