সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাগেশ্বরীতে কনকনে ঠাণ্ডায় কাবু জনজীবন

ওমর ফারুক, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২৯

“মাঘে বাঘের দাঁত নড়ে” গ্রামীণ এই প্রবাদটি যেনো সত্যি হয়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায়। কেননা মাঘের শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এ উপজেলার জনজীবন। উত্তরের এ উপজেলা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারী শৈত্য প্রবাহ। কনকনে ঠাণ্ডা ও ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে জনপদ। ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশা আর তীব্র ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ। কনকনে ঠাণ্ডায় সময় মত কাজে বের হতে পারছেন না তারা। বৃষ্টির ফোটার মত পড়ছে কুয়াশা। দিনের বেলাতেও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করছে। এতে করে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাপমাত্রা ১০ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকায় বেশকিছুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। শিশু বৃদ্ধ এবং গবাদি পশু নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।

শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশি। চরম ঠাণ্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো। কনকনে ঠাণ্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তাদের। শীত নিবারনের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন ঠাণ্ডায় কাবু মাণুষগুলো। এ অবস্থায় ফুটপাতের গরম কাপরের দোকানগুলোতে বেড়েছে ভিড়।

এছাড়াও তীব্র শীতে বোরো বীজতলার ক্ষতি হয়েছে ব্যাপকহারে। ফলে পিছিয়ে পড়ছে বোরো চাষ। এরপরও অনেক এলাকায় চোখে পড়েছে বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। পেটের তাগিদে হিম কুয়াশা আর ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষ। বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের আব্দুছ ছাত্তার বলেন তিনি ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করে ধানের বীজ লাগিয়েছেন। কিন্তু শীতের কারণে সব নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর চারা কিনে ধান লাগাতে হবে তাকে। একই কথা জানান ওই এলাকার সুরমান আলী। সাপখাওয়া মোল্লারভিটা এলাকার পিলপিলি বেগম জানায় তার ৩টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। দিন রাত গরম পানি খাওয়াতে হয় গরুকে।

এছাড়াও বস্তা ও কাথা গায়ে দিয়ের গরুর ঠান্ডা দূও করতে পারছেন না তিনি। আশির্ধ্বো ছাবেদ আলী জানায়, তিনি বৃদ্ধ মানুষ। আগে রিকশা চালাতেন তিনি। এখন বয়স হওয়ায় আর শরির চলে না। তাই আর কামকাজ করতে পারছেন না তিনি। শীতে গরম কাপরের অভাব রয়েছে তার। রাতে ঠাণ্ডায় ঘুম আসে না তার। পৌরসভা এলাকার কৃষক সোলায়মান আলী জানায়, তার ৪ বছরের একটা ছেলে রয়েছে। ৪ দিন ধরে তার ডায়েরিয়া। এছাড়াও তার বাড়ির আশেপাশের দুই-তিন জন শিশু সর্দি, কাশি, জ¦রে ভুগছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানুয়ারি মাস জুরেই এমন তাপমাত্রাঅব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৮ জানুয়ারির পর তপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে