সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সৈকতে গান গাওয়া জান্নাত পেল ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র

জাবেদ আবেদীন শাহীন, কক্সবাজার
  ১৪ মার্চ ২০২৪, ১২:২৬
ছবি-যায়যায়দিন

চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুরে জান্নাত। কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ ঘোনার পাড়া এলাকার বসবাসকারী হতদরিদ্র, নিঃস্ব ও সহায়সম্বলহীন জান্নাতের বাবা পঙ্গু মুহাম্মদ ইসলাম আর মা গৃহিণী এক বোন, দুই ভাই ৫ জনের পরিবার। অভাবের তাড়নায় তাদের সংসারে হাল ধরতে কক্সবাজার সৈকতে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের গান শুনান শিশু জান্নাত। তাঁর গান শুনে পর্যটকেরা সন্তুষ্ট হয়ে বিনিময়ে দেন পারিশ্রমিক। আর তা নিয়ে কোন মতে চলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া এই ক্ষুদে শিক্ষার্থী জান্নাতের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন পূর্বে একটি বেসরকারি সংবাদভিত্তিক টেলিভিশনে প্রতিবেদন প্রচার হয়। খবরটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানার পর শিশু জান্নাতের পাশে দাড়ান। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে শিশু জান্নাতকে দেয়া হয়় ১০ লাখ টাকা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান মঙ্গলবার জান্নাতের পরিবারটির হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০লাখ টাকার সঞ্চপত্রের কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান জানান, কিছুদিন পূর্বে একটি সংবাদ ভিত্তিক টেলিভিশনে শিশু জান্নাতকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তিনি বিষয়টি খোঁজ খবর নেয়ার নিদের্শ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো ১০ লাখ টাকার সঞ্চয় পত্রের কাগজপত্র নুরে জান্নাতের পরিবারের কাছে মঙ্গলবার হস্তান্তর করা হয়।

তিনি আরো জানান, নুরে জান্নাতের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরও ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘরের কাজ শেষ হলে তারা সেখানে থাকতে পারবে বলে জানান তিনি।

নুরে জান্নাতের বাবা মুহাম্মদ ইসলাম বলেন, ছেলেমেয়ে নিয়ে কষ্টের সংসারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মেয়ের খবর জানতে পেরে সহযোগতিার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়ায় করি সব সময়। আমার কষ্টের সংসারে এখন সুখের হাসি ফুটেছে শুধু মাত্র প্রধানমন্ত্রীর কারনে। পঙ্গুত্বের কারনে ভারি কোন কাজও করতে পারি না। দিন মজুরি কাজ করতে গিয়ে তিন বছর আগের একটি দূর্ঘটনায় প্গংু হয়ে পড়ি। এখন ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার চেষ্ট করব।

তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ে জান্নাত কক্সবাজারের ঘোনার পাড়া কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সংসারের হাল ধরতেই সমুদ্র সৈকতে গান গেয়ে আয় রোজগার করে সে। তবে এতেও বন্ধ করেনি লেখা পড়া ।

নুরে জান্নাত বলেন, আমার খুব ইচ্ছে লেখাপড়া করার। বাবার কোন টাকা কাজ করতে পারে না। তাই আমি পড়ালেখার পাশাশি সাগর পাড়ে পর্যটকদের গান শুনাই। তারা আমার শুনে কিছু টাকা পয়সা দেয়। গান করি বলে সামান্য কিছু খেতে পারি আমরা। আমার গান করার খবর জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী আমাকে সাহায্য করেন। আমি এখন খুব খুশি। সবাই আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা বলেন, এর আগে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তার পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা ও নুরের পড়ালেখার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। সে যাতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য সব ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে