সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেনীর ফাজিলপুরে চলাচলের রাস্তা বন্ধ

ফেনী প্রতিনিধি
  ১৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২৬
ছবি-যায়যায়দিন

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাঈন উদ্দিন নামে এক জমির মালিকের বিরুদ্ধে। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জামাল কাজী বাড়ির ৫০টি পরিবার। তাদের প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে স্থানীয় বাজারে আসা যাওয়া করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার ১২ মার্চ ইউনিয়নের বাদামতলীতে ৩০ বছরের পুরোনো চলাচলের রাস্তা কেটে বাঁশ ও কাঁটা দিয়ে পথ বন্ধ করে রাখায় গত ৬ দিন ধরে বিপাকে ৫০ পরিবারের পাঁচ শতাধিক মানুষ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের জামাল কাজী বাড়ির চলাচলের পুরোনো ৩০০ ফুট রাস্তার ২০ ফুট রাস্তা কেটে মাটি সরিয়ে নেয় এবং কাটা অংশে কাঁটা গাছ ও দুপাশে বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এতে রমজান মাসে ওই বাড়ির মানুষ হাটবাজার, হাসপাতাল, প্রাত্যহিক কাজ ও বয়োবৃদ্ধ মানুষরা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারছে না। এছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাপড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। চরম কষ্টে দিন পার করছে বাড়ির বাসিন্দারা।

ওই বাড়ির বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার পেয়ার আহমেদ জানান, আমাদের একই বাড়ির লোকমান ড্রাইভারের থেকে ১০ বছর পূর্বে ৬ শতাংশ সম্পত্তি ক্রয় করে যার মধ্যে এক শতাংশ সম্পত্তি এ বাড়ির চলাচলের পথের জন্য ব্যবহার হয়ে আসছিল। ওই সম্পত্তি বিক্রির সময় বারবার লোকমান ড্রাইভার এক শতাংশ বাদ দিয়ে রেজিস্ট্রি করতে চাইলেও কাগজে রেকর্ড করা ছয় শতাংশ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেন একই বাড়ির কবির আহমেদের ছেলে মাঈন উদ্দিন।

তিনি জানান, সম্পত্তি বিক্রির সময় লোকমান ড্রাইভারকে পাঁচ শতাংশ জমির মূল্য পরিশোধ করেন ক্রেতা। তবুও ছয় শতাংশ দাবি করে প্রথম রমজানের দিন হঠাৎ কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই অনেক লোকজন এনে বহু বছরের পুরোনো রাস্তা প্রায় ২০ ফুট কেটে জমির সমান করে ফেলে। শুধু তাই নয়, ওই কাটা জায়গায় কাঁটা গাছ ও বাঁশ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে চলাচল বন্ধ করে দেয়।

একই বাড়ির নজরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ বছর ধরে বাড়ির শত শত নারী পুরুষ এ পথে চলাচল করে এসেছে। বিনা নোটিশে কিংবা কোনো ধরনের কথা ছাড়াই গায়ের জোরে রাস্তাটি কেটে নেওয়ায় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্রছাত্রী ও শিশুরা এক ধরনের গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ জানান, এটি একটি অমানবিক ও মানব গর্হিত কাজ।

ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মজিবুল হক রিপন জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেহেতু এ সড়ক দিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে ওই বাড়ির লোকজন চলাচল করছে সেহেতু রাস্তাটি না কেটে উভয়পক্ষ সমঝোতার মধ্য দিয়ে সমাধান করা যেত। বিষয়টি যখন আদালতের বিষয় বিবাদী পক্ষ বলেছে, সেহেতু সার্বিক বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে ন্যায় বিচার প্রাপ্ত হবে।

এ বিষয়ে জানতে মাঈন উদ্দিনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি।

ফেনী সদরের ইউএনও হুমায়ুন রশিদ জানান, বিষয়টি অবগত হয়েছি। আদালতের রায়ের বিষয়ে কাগজপত্র উপস্থাপন করার জন্য উভয় পক্ষকে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে