নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পে শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া।
বুধবার সকালে ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য স্থাপিত স্কুল ও রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত ২০ শয্যা হাসপাতাল পরিদর্শন, নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
ভাসানচরের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে ৩৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে হেলিকপ্টারযোগে ভাসানচর পৌঁছেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া।
এসময় নৌবাহিনী ঘাঁটির ১ নং হেলিপ্যাডে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের এরিয়া কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল খন্দকার মিসবাহ উল আজিম, সম্মুখ ঘাঁটির অধিনায়ক কমান্ডার আনোয়ারুল কবির, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার (ভাসানচর) মাহফুজার রহমান, ক্যাম্প ইনচার্জ মো. রফিকুল হক, নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোর্তাহীন বিল্লাহ প্রমুখ।
তারপর সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া ৬৭ নং ক্লাস্টারে অবস্থিত ব্র্যাক এনজিওর স্কুল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা-চিকিৎসা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর ভিআইপি গেস্ট হাউজে অবস্থান শেষে সকাল ১১ টা ৫০ মিনিটে প্রতিনিধিদল নিয়ে হেলিকপ্টারযোগে চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে তিনি ভাসানচর ত্যাগ করেন।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার (ভাসানচর) মাহফুজার রহমান বলেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া ভাসানচরে নেমে কিভাবে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় এবং কিভাবে শিক্ষা দেওয়া হয় তার বিস্তারিত জেনেছেন। প্রায় এক ঘন্টা তিনি এই দুইটি স্থান পরিদর্শন করেছেন। এর বাহিরে আরও কোথাও তিনি যাননি। তবে আমাদের নৌ এম্বুল্যান্স নেই। সেটি দ্রুত পাওয়ার কথা রয়েছে তা আমরা জানিয়েছি। সবশেষ তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সেবায় সন্তুষ্ট হয়েছেন।
এর আগে সকাল ৮ টায় হেলিকপ্টারযোগে হাতিয়া অবতরণ করেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছাদূত সুইডেনের প্রিন্সেস ক্রাউন ভিক্টোরিয়া। তারপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের অনুভূতি শুনে ও তাদের জীবন-জীবিকা অবলোকন শেষে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করবেন বলে জানান। এরপর ৯ টায় ৪৫ মিনিটে তিনি বুড়িরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দেইল এলাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
প্রসঙ্গত, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নৌবাহিনী। বিভিন্ন ধাপে কক্সবাজার থেকে এখানে প্রায় ৩৬ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হয়।
যাযাদি/ এম