নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ছাত্রলীগের দ্বন্দ্ব-বিরোধ এখন চরমে রূপ নিয়েছে। এক পক্ষ বলছে পকেট কমিটি, অছাত্র ও শিবিরের কর্মীরা এখন ছাত্রলীগ করছে। অন্য পক্ষে বলছে, বিবাহিতরা, অছাত্র, দখলবাজ, বিভিন্ন মামলার আসামিরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে রয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী বাজারে রাজমহল রেস্তোরায় দেলোয়ার হোসেন সুজন ও শ্যামল উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কমিটি, অছাত্র,ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়দানকারী বিবাহিতসহ নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ নিয়ে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে বিরোধ।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ মে নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের তৎকালিন সভাপতি আসাদুজ্জামান আরমান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত আদনান ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেন। চলতি বছরের ২৪ মার্চ নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবাইয়াত রহমান আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুল হুদা বাপ্পির স্বাক্ষরিত চিঠিতে সোনাইমুড়ী উপজেলার ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি আরিফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদকে দলের সাংগঠনিক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত বছরের শুক্রবার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি হোসাইন সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী ওয়াসিফ ইনান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে সোনাইমুড়ী মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের হলরুমে নেতাকর্মীদের সভা করেন। ওই সভায় সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বাকের, সাধারণ সম্পাদক আফম বাবুল বাবু, সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান বাহার সহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা দেলওয়ার হোসেন সুজন ও শ্যামল উদ্দীনের নেতৃত্ব অনুষ্ঠানে হট্টগোল করে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা শ্যামল উদ্দিন বলেন,জামায়াত শিবির থেকে আগত নেতারা আজকে ছাত্রলীগ করছে।জেলার পূর্বের কমিটি অনুমোদন দিয়েছিল উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি। জেলাতে নতুন কমিটি হয়েছে।উপজেলার এই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখানকার যারা নেতা দাবি করছেন তারা কেউ নয়। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে এখন ছাত্রলীগ করছে।এরা আবার বিবাহিত।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, আমরা আমাদের কার্যক্রম করছি। জেলা ছাত্রলীগ পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে গত বছরের ১৫ মে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করে।চাঁদাবাজি মামলার আসামি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিএনপি জামাতের লোক, সরকারি জায়গা দখলকারী,অটো রিক্সা থেকে চাঁদাবাজরা এখন ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিচ্ছে। বিগত সংসদ নির্বাচনে জনৈক প্রার্থী এদের মদদত দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম বলেন, এখানে কেন্দ্র একটি কমিটি দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের পুরনো কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছিল।বিভিন্ন সভা সমাবেশ এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে আরিফ হোসেন নেতৃত্বধীন কমিটির সদস্যকে দেখা যাচ্ছে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ প ম বাবুল বাবু বলেন, কমিটি ঘোষণার দেয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা প্রদান করেন। তবে বর্তমানে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। গত বুধবার কিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি শুনেছেন।
যাযাদি/এসএস