দুই গ্রামের মানুষকে ঈদের উপহার হিসেবে চলাচলের জন্য খালের উপর কাঠ দিয়ে ৩৫ ফুট লম্বা সেতু তৈরি করে দিয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরের দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতি নামের একটি সংগঠন।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলের দিকে পৌর এলাকার লোহাগাছ ও রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রামের সংযোগ স্থলে নির্মিতি সেতুটি লোকজনের চলাচলের জন্য উপযোগী করে দেওয়া হয়।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রাম ও শ্রীপুর পৌরসভার লোহাগাছ গ্রামের শেষ প্রান্তে অবস্থিত একটি খাল যা "কাটা খাল" নামে পরিচিত। খালের একপাড়ে বিন্দুবাড়ি গ্রামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। রয়েছে ২টি বাজার ও ভোট কেন্দ্রও। আর ওপারে লোহাগাছ গ্রাম ছাড়াও জিউসি এলাকা। কিন্তু এ দুই গ্রামের লোকজনের চলাচলের রাস্তায় কোনো সংযোগ সেতু না থাকায় গ্রামবাসীদের যাতায়াত ছিল কষ্টসাধ্য। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার লোকজনের চলাচল ছিল বাঁশের সাঁকো দিয়ে। মাঝেমধ্যেই সেটা ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতো সাধারণ মানুষ। ঈদ উপলক্ষে লোহাগাছ দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ঈদের ২ দিন আগেই শুরু কাঠ দিয়ে ওই ৩৫ ফুট দৈর্ঘ ও ৪ফুট প্রস্থের ওই সেতুর কাজ। ঈদের ২ দিন পর সেটি চলাচলের জন্য উপযোগী করা হয়। সেতুটিতে পাথরের তৈরি খুঁটি, আকাশমণি কাঠ ও কিছু রট ব্যবহার করা হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সেতু নির্মাণে অংশ নিয়েছেন, লোহাগাছ দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিলিটারি,সাধারণ সম্পাদক আলফাজ সরকার আকাশ, অবসরপ্রাপ্ত ইএসএম নিজাম উদ্দিন,কার্পেন্টার আব্দুল সাহিদ, আব্দুল কাদের, ফজলুল হক, মনির হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন,ইসমাইল হোসেন, হযরত আলী,রফিকুল ইসলাম, হারুন উর রশিদ, শামছুল হক, দুস্থ সেবা উন্নয়ন সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিমেল,সুজন মিয়া, এনামুল হক, আবু বকর সিদ্দিক, সজিব সরকার,আরাফাত হোসেন, সাব্বির হোসেন,মাছুম মিয়া,খায়রুল, সাদিকুল প্রমূখ।

মামলার তথ্য গোপন, সেতুমন্ত্রীর ভাইয়ের মনোনয়ন বাতিল

কাঠের সেতুটি তৈরি হওয়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ‘আনন্দের বন্যা’ বইছে বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয় আব্দুল আউয়াল মিলিটারি জানান, সেতুর কারণে কৃষকদের মাঠ থেকে ফসল বাড়িতে নেওয়া এবং ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজ ও হাট-বাজারে যাতায়াত সহজ হয়েছে।

দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতির সভাপতি আলফাজ সরকার আকাশ বলেন, "এই সেতু না থাকলে লোহাগাছ গ্রাম থেকে বিন্দুবাড়ির ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে ঘুরতে হত অন্তত ১ কিলোমিটার পথ। শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের ওপর ভর করে খাল দিয়ে কোনোরকম পারাপার হওয়া গেলেও বর্ষায় কষ্টের সীমা থাকে না। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। এছাড়া বয়স্কদের জন্যও চলাচল ছিল বেশ কষ্টকর। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল কাটা খালটিতে একটি সেতু নির্মাণের"।

তিনি আরো বলেন "দুস্থ সেবায় যুব উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে এবং এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আজকে এ কষ্টের পরিত্রাণ মিলেছে। কৃতজ্ঞতা থাকবে যারা শ্রম,অর্থ ও সময় দিয়ে কালভার্টের জন্য কাজ করেছেন। সকলের সহযোগিতা পেলে আগামীতে সমাজসেবামূলক আরও কাজ করতে পারবে সংগঠনটি"।

যাযাদি/ এস