রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ফরিদপুরে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু

ফরিদপুর প্রতিনিধি
  ০৬ মে ২০২৪, ২০:১৬
ছবি-যায়যায়দিন

ফরিদপুরে অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য শহরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলায় সামান্য বৃষ্টির দেখা মিললেও শহরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর বজ্রপাতের ঝলকানিই স্বান্তনা জুগিয়েছে তৃষ্ণান্তদের মনে। বিকেলের দিকেও কয়েকটি স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নামার খবর পাওয়া গেছে।

গত কয়েকমাস তীব্র রোদ ও গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত ফরিদপুরের সাধারণ মানুষের। এ অবস্থায় সোমবার (৬ মে) দুপুর ৩ টার দিকে দেখা মিলে স্বস্তির বৃষ্টির। তবে পরিমানে সামান্য।

এদিকে, বিকেলে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মিরাপাড়ায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

ফরিদপুরের আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মোঃ সেলিম রেজা বলেন, সোমবার দুপুরে ফরিদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৪ ডিগ্রী। বিকালে ফরিদপুর সদরসহ বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফরিদপুরে ১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার সকাল পেরিয়ে বেলা গড়াতে আকাশ মেঘলা হয়ে উঠে। বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটের দিকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে। এরপর থেকেই বৃষ্টির জন্য আকাঙ্ক্ষা আরো বেড়ে যায়। তবে দু'একবার এমন বৃষ্টির ফোঁটা এসেও মিলিয়ে যায়। এরপর দুপুর ৩ টার দিকে কয়েকটি স্থানে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি নামে। অবশ্য পরিমাণে তা অল্প হলেও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে পরিবেশ শীতল হয়ে উঠে।

সাম্প্রতিককালে গত কয়েক মাসে ফরিদপুরে বৃষ্টির দেখা না মিলায় মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। পুকুর ও জলা শুকিয়ে গেছে। আর গত কয়েকদিনে প্রখর রৌদ্রতাপের ফলে বয়ে যাচ্ছিলো তাপদাহ। গরম থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করে কান্নাকাটি করছিল মানুষ। এ অবস্থায় সোমবার কিছুটা হলেও বৃষ্টির দেখা মিলে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ দাউদুজ্জামান বলেন, কয়েক মাস পরে সামান্য বৃষ্টি হলেও পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে এসেছে। এতে প্রাণিকুলে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।

চরভদ্রাসন থেকে আব্দুস সবুর কাজল জানান, দুপুর ৩ টার দিকে থেমে থেমে বৃষ্টির গুঁড়ি পড়তে শুরু করে। বিকেল সন্ধ্যা ৬টার পরেও বৃষ্টির গুঁড়ি পড়ছিলো। সালথার বাসিন্দা বিধান মন্ডল বলেন, প্রচন্ড রোদ আর গরমে ঘরে বাইরে কোথাও যেন শান্তি পাওয়া যাচ্ছিলো না।

বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা গরমে কষ্ট পাচ্ছিলেন সবচেয়ে বেশি। তবে মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা ঠান্ডা হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছেন ফরিদপুরের জনজীবনে। মধুখালী উপজেলার ব্যাসদির শাহজাহান হেলাল বলেন, প্রখর রোদ আর গরমে প্রাণীকুল জীবন যেন যায় যায় অবস্থা। মানুষের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে। তবে বৃষ্টির পরে আবহাওয়া কিছুটা হলেও ঠান্ডা হয়েছে।

আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজ প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, আলফাডাঙ্গায় মেঘের গর্জন, বাতাসের সাথে সাথে সামান্য পরিমান বৃষ্টি হয়েছে। তবে পরিবেশ ও মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। বোয়ালমারী উপজেলার পৌরসদরের সুমন খান বলেন, যদিও বৃষ্টি পরিমানে সামান্য নেমেছে। তাও মানুষের বাঁচার মতো পরিবেশ হয়েছে।

এদিকে, মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে আকাশে বিদ্যুৎ চমকানির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সোমবার বিকেলে কামালদিয়া ইউনিয়নের মিরাপাড়া গ্রামে মুরাদ মল্লিক (৫৩) নামে একজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মধুখালী উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়ালিদ হাসান মামুন জানান, ওই কৃষক মরিচ ক্ষেতে কাজ করতে গেলে বজ্রপাতের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থায় খোলা মাঠে বিশেষ কাজে বের হলে তাদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে