মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২

বিয়ের ১ বছরের মাথায় জীবন প্রদীপ নিভু নিভু তরুণীর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
  ০৫ মে ২০২৫, ২০:২৭
বিয়ের ১ বছরের মাথায় জীবন প্রদীপ নিভু নিভু তরুণীর
ছবি: যায়যায়দিন

বিয়ের ১ বছরের মাথায় জীবন প্রদীপ নিভু নিভু কুড়িগ্রামের ২০ বছর বয়সী তরুণী নাজমিন নাহারের। এমন বয়সে নষ্ট হয়ে গেছে হার্টের দু-টি ভালভ। এদিকে স্ত্রীর অসুস্থতা দেখে ছেড়ে গেছে স্বামীও। পিতা হারা তরুণীর নেই উন্নত চিকিৎসার সামর্থ। এ অবস্থায় দেশ বাসীর সহযোগিতায় বাঁচতে চায় সে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নিজের অসুস্থতায় ছেড়ে গেছে স্বামী। বিধবা মায়ের ঘরে আশ্রয় নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে দিন কাটছে তরুণীর। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া এলাকার মৃত জাবেদ আলী-মর্জিনা বেগম দম্পতির ৮ সন্তানের মধ্যে ৫ম নাজমিন।

এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে রংপুরের বাসিন্দা খালেক নামের এক গার্মেন্টস শ্রমিকের সাথে বিয়ে হয় তার। অভাব অনটনের সংসারের ঘানি টানতে নিজেও ঢাকায় গিয়ে স্বামীর সাথে শুরু করেন গার্মেন্টসে কাজ। কাজ করা অবস্থায় গত ৫ মাস আগে হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে ফিরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে পরিক্ষা নিরিক্ষায় জানা যায় তার হার্টের দু-টি ভালভ নষ্ট হয়ে গেছে।

অসুস্থ নাজমিনের পরিবার জানান, চিকিৎসক জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন তরুণী। আর এতে খরচ হবে প্রায় ৫ লাখ টাকা। এদিকে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পারায় অনেকটাই মানবেতর দিন কাটছে পরিবারটির।

অসুস্থ নাজমিন নাহার বলেন, আমার অসুখ দেখে আমার স্বামী ছেড়ে গেছে। আমার বাবাও নাই যে চিকিৎসা করবে। মায়ের সংসারে অভাব থাকার কারণে আমার দুই ভাই এতিম খানায় থাকে। উন্নত চিকিৎসা তো দূরের কথা, ঠিকমতো ঔষধ কিনে খাইতে পারছি না। তাই বলবো আমার চিকিৎসায় যদি কেউ দায়িত্ব নেয় তার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।

স্থানীয় হাবিবুর রহমান মিন্টু বলেন, মেয়েটার ১ বছর আগে বিয়ে হয়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে ধরা পড়ে তার হার্টের দুটি ভালভ নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অসুস্থ দেখে তার যে স্বামী সেও ছেড়ে যায়। তার এখন চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। ঠিক মতো তিন বেলা খেতে পারে না পরিবারটি। এতো টাকা কই পাবে তারা। কেউ যদি মেয়েটির চিকিৎসায় পাশে দাড়াতো তাহলে মেয়েটা সুস্থ হতো।

নাজমিনের মা মর্জিনা বেগম বলেন, অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে মহা দুঃশ্চিতায় আছি বাবা। স্বামীও নাই যে চিকিৎসা করাবে। জামাই ছিল মেয়ের অসুখ দেখে ছেড়ে গেছে। কেউ যদি আমার মেয়েটার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতো সারাজীবন তার জন্য দোয়া করতাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু বক্কর বলেন, অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা নাজমিনের বিধবা মা। তার সুস্থতায় দরকার উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু অর্থের অভাবে তা হচ্ছে না। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি দেশবাসী সহোযোগিতা করলে হয়তো সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে