শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে পত্রিকা অফিসে বন্দুক হামলা: ৫ জন নিহত

যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ জুন ২০১৮, ০০:০০
সন্দেহভাজন জ্যারড ওয়ারেন রামোস

যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের রাজধানী অ্যানাপলিসের একটি পত্রিকা অফিসের বাতার্কক্ষে ঢুকে এক বন্দুকধারী পঁাচজনকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে পত্রিকাটির সম্পাদকও রয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছে আরও কয়েকজন। সন্দেহভাজন হামলাকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় পত্রিকা ‘ক্যাপিটাল গেজেট’-এর অফিসে এই হামলা চালানো হয়। সংবাদসূত্র : বিবিসি, সিএনএন

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদশীর্রা জানিয়েছেন, ৪০ বছর বয়সী ওই শ্বেতাঙ্গ হামলাকারী পত্রিকা অফিসের কাচের দরজা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে সে ভেতরে প্রবেশ করে লোকজন খুঁজতে শুরু করে ও গুলি ছোড়ে।

ক্যাপিটাল গেজেটের অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক ফিল ডেভিস টুইটারে জানিয়েছেন, বন্দুকধারী বাতার্কক্ষে প্রবেশ করে অতকির্ত গুলি চালায়। এতে কয়েকজন মারা যান। পরে কতৃর্পক্ষ জানায়, পঁাচজন মারা গেছেন। আর বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার সময় তিনি ও কয়েকজন একটি টেবিলের নিচে লুকিয়ে ছিলেন। হামলার ঘটনার পর ক্যাপিটাল গেজেটের আতঙ্কিত সংবাদকমীর্রা অফিস ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও শুক্রবারের পত্রিকা তারা ঠিকই বের করেছেন।

ফিল ডেভিস টুইটে লিখেছেন, টেবিলের নিচে লুকিয়ে যখন শুনতে পাবেন যে, আশপাশের মানুষের গায়ে গুলি লাগছে, আর হামলাকারী তার অস্ত্র ‘রিলোড’ করছে, এর চেয়ে আতঙ্কের আর কিছু হতে পারে না। তার ভাষায়, বাতার্কক্ষের পরিস্থিতি তখন ছিল যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। এক পযাের্য় হামলাকারী গুলি থামালেও লুকিয়ে প্রাণ বঁাচানো মানুষগুলো কেউ মাথা তোলার সাহস পাচ্ছিল না।

পুলিশ জানিয়েছে, পত্রিকাটি এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলার হুমকি পেয়েছিল। এটা ছিল পূবর্পরিকল্পিত হামলা। হামলাকারীর নাম জ্যারড ওয়ারেন রামোস। সে মেরিল্যান্ডেরই বাসিন্দা। তার ব্যাগ থেকে গ্রেনেড সদৃশ বস্তু ও স্মোকবোমা পাওয়া গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে মনে তারা করছে না।

কাউন্টি পুলিশের উপপ্রধান উইলিয়াম ক্র্যাম্ফ জানিয়েছেন, যে ভবনে পত্রিকা অফিসটি অবিস্থিত, সেখানে আরও কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কাযার্লয় রয়েছে। সেখান থেকে ১৭০ জনকে নিরাপদে বের করে আনা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে জ্যারড রামোস নামের ওই ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে, যে ২০১২ সালে ক্যাপিটাল গেজেটের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে ব্যথর্ হয়। গুলির ঘটনার এক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ওই ভবনে প্রবেশ করে। হামলাকারী তখন একটি নিচে লুকিয়ে ছিল। পুলিশকে কোনো গুলি ছুড়তে হয়নি। তদন্তকারীরা বলেছেন, ওই ব্যক্তিকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্যাপিটাল গেজেটের বিরুদ্ধে যে সব হুমকি দেয়া হয়েছিল; সেগুলোও তারা খতিয়ে দেখছেন।

বাল্টিমোর সান মিডিয়া গ্রæপের মালিকানাধীন ক্যাপিটাল গেজেটের বেশ কয়েকটি প্রকাশনা রয়েছে। এর মধ্যে দ্য ক্যাপিটাল নামে একটি পত্রিকা আছে, যার সূচনা হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম কাযার্লয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউইয়কের্ বিভিন্ন পত্রিকা অফিসের সামনে অস্ত্রধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার এ ঘটনা সম্পকের্ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হলে এক টুইটে তিনি হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি সারা স্যান্ডাসর্ও ‘নিজেদের কাজের মধ্যে থাকা নিরপরাধ সাংবাদিকদের’ ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে