শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে তিন চুক্তি সই

দু'দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক
নতুনধারা
  ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

একটি দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জন এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে বহির্বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখা জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সংস্কৃতি বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক ও একটি নথি সই হয়েছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োনের একান্ত ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ সমঝোতা স্মারক ও নথি সই হয়। প্রসঙ্গত, সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ডিপেস্নাম্যাটিক একাডেমির মধ্যে। বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা)। আর সংস্কৃতি বিনিময়ে নথি সই করেছে দুই দেশের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আমরা বলতে চাই, দু'দেশের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে চুক্তির বিষয়টি প্রভাবক। এ ক্ষেত্রে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশকে অগ্রগতির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা দেশের অর্থনীতির সঙ্গে বিনিয়োগ সম্পর্কিত। সংশ্লিষ্টদের মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এসব কারণে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়ন সহযোগিতার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের চুক্তি সম্পাদন ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহযোগিতা বাংলাদেশের এই স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হতে পারে এমনটি মনে করা অসঙ্গত নয়। ফলে এবারে যখন বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সংস্কৃতি বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক ও একটি নথি সই হয়েছে, তখন তা বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে দু'দেশের সম্পর্ক আরও বেশি দৃঢ় হবে এমনটি আমরা প্রত্যাশা করতে চাই।

লক্ষণীয়, জানা গেছে যে, বৈঠকে কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও বিনিয়োগের সুযোগ থাকার কথা তুলে ধরেন এবং জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে তারা সহযোগিতা করতে চায় ও পরমাণু বিদু্যতে তারা আগ্রহী এমন বিষয় আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টরা এগুলো আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়ার আহ্বানও জানান। আমরা আশা করি দক্ষিণ কোরিয়া এই আহ্বানে সাড়া দেবে এবং দুই দেশের সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করবে। যদিও দক্ষিণ কোরিয়া শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা বিবেচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন, যা ইতিবাচক। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং তারা রোহিঙ্গাদের জন্য যা যা করা সম্ভব তাই করবে বলে জানিয়েছেন। ফলে এই সংকটে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকবে এমনটিও আমরা প্রত্যাশা করি।

সর্বোপরি বলতে চাই, এই চুক্তির মধ্যদিয়ে দু'দেশের সম্পর্ক আরও বেশি সুসংহত হোক। আরেকটি বিষয় উলেস্নখ করা দরকার, গত কয়েক বছর ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়োগ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বাংলাদেশি কর্মীদের চাহিদা কমছে এমনটি জানা যাচ্ছে, অথচ একসময় বাংলাদেশি কর্মীদের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম দিকে থাকলেও এখন তাদের হটিয়ে নেপাল, ভিয়েতনাম, মিয়ানমারের কর্মীরা জায়গা দখল করে নিয়েছে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, বাংলাদেশিরা অল্প সময়ের মধ্যে ঘনঘন চাকরি পরিবর্তন করেন, ফলে অনেক নিয়োগদাতা খুশি নন। এ ছাড়া অনেক কর্মীর মালিকদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, খাবারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সমস্যার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে সার্টিফিকেট জালিয়াতির সমস্যা! আমরা মনে করি এই বিষয়টি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং কর্মীদের সচেতন করতে উদ্যোগী হতে হবে। সার্বিক বিষয় আমলে নিয়ে দু'দেশের সম্পর্কর উন্নয়নে যথাযথ প্রচেষ্টা জারি থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58383 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1