শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী শ্রমিক পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা

যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে
নতুনধারা
  ০৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

বিদেশে কাজ করতে গিয়ে প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনে ঘটছে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এছাড়া সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে এমনটিও জানা যাচ্ছে যে, নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায়ই মারা যাচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিক, অথচ উদ্বেগজনক বিষয় হলো এসব ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃপক্ষ ও দেশি-বিদেশি এজেন্টরা। আর এসব যে হত্যাকান্ড, তা প্রমাণের জন্য নিহতের স্বজনরা মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দূতাবাসে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও এ ব্যাপারে তারা কোনো ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছেন না- ফলে অধিকাংশ নিহতের পরিবার এসব হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে।

আমরা মনে করি, যত দ্রম্নত সম্ভব সৃষ্ট এ পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং সার্বিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী শ্রমিকদের অবদান অত্যন্ত প্রভাবক, তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে। আর বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রবাসী শ্রমিকরা পরিবার পরিজন ছেড়ে কাজ করতে বিদেশ যায়, সেখানে গিয়ে যদি নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে কেউ নিহত হয়, আর সেটাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়, তবে এটি অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এমন পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়।

তথ্য মতে, সৌদিসহ বিভিন্ন দেশে কাজের জন্য যাওয়া শ্রমিকের লাশ বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে প্রতিনিয়ত। খবরে উঠে এসেছে যে, এসব শ্রমিকের অধিকাংশের মৃতু্য হৃদরোগ ও আত্মহত্যাকে কারণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই আত্মহত্যাকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে যে, তথ্য প্রমাণ বলছে- এসব শ্রমিকের বেশির ভাগই নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হন। যেটি প্রমাণিত হলে ভুক্তভোগী পরিবার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেতেন। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এই বিষয়গুলোকে আমলে নেয়া এবং যত দ্রম্নত সম্ভব এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা।

লক্ষণীয় বিষয়- যেখানে হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া শ্রমিকের পরিবার বলছে, এসব হত্যাকান্ডের পর এটি আত্মহত্যা বা হৃদরোগে মৃতু্য বলে চালানোর জন্য চেষ্টা করে নির্যাতনকারী মালিকপক্ষ। মূলত জরিমানা দেয়ার হাত থেকে বাঁচতেই তারা এমনটি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, জরিমানা দেয়ার হাত থেকে বাঁচতে মালিকপক্ষ হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বা হৃদরোগে মৃতু্য বলে চালিয়ে দিতে চেষ্টা করবে এটা হতে পারে না। ফলে সার্বিকভাবে এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না।

সর্বোপরি বলতে চাই, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে- পরিবারের সদস্য প্রবাসে কাজে গিয়ে হত্যার শিকার হলেও তা প্রমাণে দেশি, বিদেশি, সরকারি, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সহায়তা করেনি, যা সংশ্লিষ্টদের আমলে নেয়া জরুরি। এছাড়া এটাও মনে রাখা সমীচীন যে, নানা সময়েই পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে- বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচারে একটা শ্রেণি সক্রিয়, যার ফলে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যত দ্রম্নত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<60935 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1