শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে সম্রাট

ক্যাসিনো সংস্কৃতি রোধ হোক
নতুনধারা
  ০৮ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

সাম্প্রতিক সময়ের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানসহ দুর্নীতি অভিযানের বিষয়টি ব্যাপকভাবেই আলোচিত। আর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ক্ষেত্রে বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দেশের বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাবে অভিযানে বেরিয়ে আসে ক্যাসিনো এবং জুয়া-মাদকের বিষয়টি। যুবলীগ নেতা, ক্রীড়া সংগঠকসহ অনেকে গ্রেপ্তার হতে থাকে, আর তা মূলত ক্যাসিনোকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল- রবিবার এক অভিযানে যুবলীগের শীর্ষ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তথ্য মতে, ভোরে কুমিলস্নার নিভৃতপলস্নী ভারতের সীমান্তঘেঁষা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে সহযোগী যুবলীগ নেতা এনামুল হক আরমানসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এরপর সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে তার কাকরাইলের অফিসে অভিযান চালায়র্ যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই অফিস থেকে একটি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা ও দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-২০১২ অনুযায়ী অবৈধভাবে বন্যপ্রাণীর চামড়া সংরক্ষণের অভিযোগে তার ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাদের কাছ থেকে বিদেশি মদও পাওয়া গেছে- এ কারণে আরমানকেও ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছের্ যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, এই গ্রেপ্তার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতের্ যাব মহাপরিচালক বলেছেন যে, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর সবগুলোতেই সম্রাটের নাম পাওয়া যাচ্ছিল এবং তখনই তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা শুরু করের্ যাব। কিন্তু পালিয়ে যান সম্রাট। বারবার স্থান বদলের কারণে তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে অবস্থান নিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেনর্ যাব মহাপরিচালক।

প্রসঙ্গত, আমরা উলেস্নখ করতে চাই, মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা ও পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দেশের বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। আর এটাও বলা প্রয়োজন- প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভাষণ-বিবৃতির পরে স্বাভাবিকভাবেই জনমনে আশার সঞ্চার করে। এ ক্ষেত্রে এটাও উলেস্নখ্য যে, শুধু দেশের জনগণের মনে আশার সঞ্চারই নয়, বরং দুর্নীতিবিরোধী অভিযান বিশ্বব্যাপী নানা মহলে প্রশংসিত হয়েছে বলেও জানা গেছে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই পদক্ষেপের ফলে সরকারের ভাবমূর্তি কয়েক দশকের মধ্যে সর্ব্বোচ অবস্থানে আছে এমনটিও সামনে এসেছে। আমরা মনে করি, এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন সংক্রান্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান এবং গ্রেপ্তারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তা আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সরকারের এই অভিযানের মধ্য দিয়ে যে দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতি-অর্থনীতি ক্যাসিনোর মতো ঘটনার জন্ম দিয়েছে তা রোধ করা জরুরি। কেননা, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন কখনও দেশের জন্য সুখকর হতে পারে না। ফলে প্রয়োজনীয় অভিযান যেমন অব্যাহত রাখতে হবে, তেমনিভাবে যে কোনো ধরনের নেতিবাচক ও অনাকঙ্ক্ষিত কর্মকান্ড রোধে সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<70045 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1