শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
অমর একুশে

আন্দোলনে গুটিকয়েক পত্রিকার সাহসী ভূমিকা

যাযাদি রিপোটর্
  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০৭

বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তখন মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল। দেশের প্রায় সব শহরে ভাষার দাবিতে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। তবে ভাষার জন্য মানুষের আবেগ-ভালোবাসার এ বিষয়টি তখনকার দৈনিক পত্রিকাগুলোর পাতায় খঁুজে পাওয়া যায়নি। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারির পরও। বেপরোয়া গুলিবষর্ণ, প্রাণহানির বেদনাবিধুর সেই ঘটনা ২২ ফেব্রæয়ারি বা এর পরের দিনগুলোতে পত্রপত্রিকায় তেমনভাবে প্রতিফলিত হয়নি। তবে কয়েকটি সাপ্তাহিক ও দৈনিক মিল্লাত সংবাদ প্রকাশে গুরুত্বপূণর্ ভূমিকা রাখে। দৈনিক আজাদের সাহসী ভূমিকা দেখা গেলেও সরকারের চাপের মুখে তাদের শেষ পযর্ন্ত নতি স্বীকার করতে হয়। তখন উল্লেখযোগ্য দৈনিক বলতে ছিল দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ এবং মুসলিম লীগ সমথর্ক মনির্ং নিউজ। ছিল দৈনিক ইনসাফ এবং দৈনিক মিল্লাত। ভাষা আন্দোলনের সময়ই ১৪ ফেব্রæয়ারি পূবর্বাংলা জননিরাপত্তা অডির্ন্যান্সের মাধ্যমে পূবর্বাংলা সরকার পাকিস্তান অবজারভার-এর প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে। সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর মধ্যে ছিল তমদ্দুন মজলিশের মুখপত্র সৈনিক, সাপ্তাহিক ইত্তেফাক ও সাপ্তাহিক নওবেলাল। এছাড়াও জিন্দেগী ও চাষী নামের দুটি সাপ্তাহিক ছিল। ২২ ফেব্রæয়ারি মনির্ং নিউজ পত্রিকায় দুটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছিল। তার একটি ছিল ২১ ফেব্রæয়ারির গুলিবষর্ণ ও ছাত্রদের আচরণ নিয়ে। পত্রিকাটি একুশে ফেব্রæয়ারি ও সমগ্র ভাষা আন্দোলনের ব্যাপারকে ভারতের দ্বারা অনুপ্রাণিত এবং হিন্দুদের দ্বারা সংগঠিত বিষয় হিসেবে উপস্থাপিত করে পুরো ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক চরিত্র দেয়ার চেষ্টা চালায়। প্রতিবেদনে তারা মিথ্যে তথ্য দেয়। তৎকালীন প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা আকরম খঁার মালিকানাধীন আজাদ একুশে ফেব্রæয়ারি দিন সন্ধ্যায়ই বিশেষ জরুরি সংখ্যা বা টেলিগ্রাম প্রকাশ করে। প্রায় সপ্তাহব্যাপী আজাদ-এর এ সংক্রান্ত পরিবেশনা ছিল অনবদ্য। কিন্তু সরকারের উচ্চ মহলের চাপের ফলে আজাদ-এর এই বিপ্লবী ভূমিকা একপযাের্য় স্তিমিত হয়ে যায়। মোহাম্মদ মোদাব্বেরের সম্পাদনায় মিল্লাত পত্রিকাও ছিল ভাষা আন্দোলনের জোরালো সমথর্ক। গুলিবষের্ণ নিহতদের সংবাদটি ব্যানার হেডিং করেছিল মিল্লাত। তাদের আরেকটি রিপোটের্র শিরোনাম ছিল, ‘রাতের অঁাধারে এত লাশ যায় কোথায়?’ সাপ্তাহিকগুলোর মধ্যে সৈনিক, ইত্তেফাক, নওবেলাল ছিল নিজস্ব ভূমিকায় উজ্জ্বল। সৈনিক সংবাদ-সম্ভারে ভরপুর যেমন ছিল, থাকত অতিরঞ্জনও। সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয়তে ছিল আবেগের বাড়াবাড়ি। ইত্তেফাক কিংবা নওবেলাল-এর প্রতিবেদনে তথ্যগত ভুল কম থাকত, কিন্তু আবেগ বা উচ্ছ¡াস কম ছিল না। বিশেষ করে, সম্পাদকীয়-উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে এর মাত্রা ছিল অনেক বেশি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে