আজকের যায়যায়দিন

বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গাজীপুরে যদি ন্যূনতম নিরপেক্ষ নিবার্চন হয় তাহলে বিএনপির প্রাথীর্ বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন। তিনি আরও যোগ করেন, যদি আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূরণ করা না হয়, তাহলে বিএনপির প্রাথীর্ জয়ী হবেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গাজীপুরে জনগণের প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে। বিএনপির নেতারা যখন গণসংযোগ করতে গিয়েছেন তখন স্থানীয়রা স্বতঃস্ফ‚তর্ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কাযার্লয়ে রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। তিনি গাজীপুরের ভোটারদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের আহŸান জানিয়ে বলেন, বিএনপির চাওয়া ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের অধিকার পূরণ করেন। গাজীপুরের জনগণের উদ্দেশে মিজার্ ফখরুল বলেন, ভোটাররা তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করবেন। ভোটাররা সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, নিজেদের ভোটাধিকার প্রদান করবেন। তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে সমাহিত করা। নিবার্চনব্যবস্থাকে ব্যবসায় পরিণত করেছে সরকার। এ কারণে গাজীপুর নিবার্চনে সুষ্ঠু নিবার্চন হলে বিএনপির প্রাথীর্ জয়ী হবেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে গাজীপুর নিবার্চন নিরপেক্ষ না হলে দলটি এর পরের সিটি করপোরেশন নিবার্চনে অংশগ্রহণ করবে কি না, সে বিষয়ে পরে জানাবে। এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, তাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার জন্য নিবার্চনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি স্থানীয় নিবার্চনগুলোয় অংশ নিচ্ছে আন্দোলনের অংশ হিসেবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এ কারণে নিবার্চনগুলো বিএনপি অংশ নিচ্ছে। এসব নিবার্চন স্বচ্ছ না হলে বিএনপি সামনের স্থানীয় পযাের্য়র নিবার্চনে অংশ নেবে কি না এবং জাতীয় নিবার্চনে অংশ নেবে কি নাÑ তা বলার সময় এখনো আসেনি। নিবার্চন কমিশনের সমালোচনা করে সাবেক মন্ত্রী ফখরুল ইসলাম বলেন, এই নিবার্চন কমিশন সম্পূণর্ অযোগ্য। কারণ যারা একটি সিটি নিবার্চন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না, তারা কীভাবে জাতীয় নিবার্চন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবেন? নিবার্চন কমিশনের কাছে যা-ই অভিযোগ করা হয়, তারা এসব শুনেও শোনে না। বিএনপির প্রাথীর্ নিবার্চন কমিশনের কাছে অনেক অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কিছুতেই কোনো কাজ হচ্ছে না। গাজীপুরের পুলিশ সুপারের বিষয়ে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল বলেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার সবার কাছে পরিচিত ও পুরোপুরি ‘আওয়ামী লীগার’। তার অতীত কমর্কাÐ সবার জানা আছে। বিএনপি আগেও পুলিশ সুপার হারুনকে এখান থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছিল, এখনো তাকে না সরালে সুষ্ঠু নিবার্চন সম্ভব না। তিনি বলেন, গাজীপুরের এসপিকে সরানোর জন্য ইসির কাছে অনুরোধ করলে তারা বলেন, তিনি (পুলিশ সুপার) তো অনেক দিন সেখানে আছেনÑ তাই তিনি অনেক কিছু জানেন। তিনি থাকলে নিবার্চন ভালো হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটে তার উল্টো। বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের নিবার্চন যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। ভোটাররা যেন সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারে। নিবার্চন কমিশন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। না হলে নিবার্চন কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি বিএনপির সুপারিশ উপেক্ষা করে সম্পূণর্ সরকারের পছন্দমতো লোক দিয়ে নিবার্চন কমিশন গঠন করেছেন। ইসির প্রধান আপাদমস্তক দলীয় লোক। এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের নিবার্চন সরকার ও ইসির জন্য অ্যাসিড টেস্ট। গাজীপুরের নিবার্চনের পর বিএনপি অন্য সিটির নিবার্চনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ গাজীপুরের নিবার্চনের ওপর অনেক কিছু নিভর্র করবে। গাজীপুরে দলীয় এজেন্ট দিতে পারবেন কি না, জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, সব কেন্দ্রের জন্য বিএনপির এজেন্ট প্রস্তুত আছেন। কিন্তু এখন তারা সেখানে থাকতে পারবেন কি না, সেটি দেখার বিষয়। কারণ খুলনাতেও প্রায় ৫০টির বেশি কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এবার গাজীপুরে কী করবে সেটা দেখার অপেক্ষায় আছে দেশের জনগণ। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার নিজেদের দলের লোক দিয়ে নিবার্চন করছে না। মূলত নিবার্চন পরিচালনা করছে পুলিশ, এসবি ও ডিবির লোকজন। সরকারের পক্ষে নিবার্চন প্রচার পরিচালনার কাজও করছে পুলিশ। তার প্রমাণ হলো পুলিশের গাড়িতে আওয়ামী লীগের প্রাথীর্র নিবার্চনী প্রচারের দৃশ্য। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।