শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কাজী রিয়াজুল হকের বক্তব্য অপরাধের সঠিক বিচার হচ্ছে না বলেই এমন নৃশংসতা

নতুনধারা
  ১২ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১২ এপ্রিল ২০১৯, ০০:১১
রিয়াজুল হক

যাযাদি রিপোর্ট ফেনীর সোগাজীতে আগুনে ঝলসে দেয়া মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। অপরাধের সঠিক বিচার হচ্ছে না বলেই এমন নৃশংসতা ঘটছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই দাবি জানান তিনি। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, 'নির্যাতিত নুসরাত থানায় গিয়েছিল প্রতিকার পেতে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, থানা পুলিশ তাকে অসম্মান করেছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও শাস্তিযোগ্য। শুনেছি, থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া রাষ্ট্রের দায়।' নিহত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত প্রসঙ্গে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, 'নুসরাত অন্যায়ের প্রতিবাদ করে গেছে। সে সাহসী নারীদের কাছে দৃষ্টান্ত। আমরা তার কাছ বেঁচে থাকার, প্রতিবাদ করার শিক্ষা পাই। আজকে 'নুসরাত দিবস' ঘোষণা করার প্রয়োজন অনুভব করছি।' মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, 'অপরাধের সঠিক বিচার হচ্ছে না বলেই এমন নৃশংসতা ... আমরা দেখেছি অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হাসিমুখে কথা বলছেন, তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই অপরাধীরা এমন সাহস পাচ্ছে।' তিনি বলেন, দ্রম্নত বিচার সম্পন্নের জন্য নতুন আইনের দাবি উঠেছে এবং এটি সময়ের দাবি। তবে আইন করলেই সমাধান নয়। আইনের প্রয়োগ না করতে পারলে মানুষ রাষ্ট্রের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। নুসরাতের অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, নিশ্চিত না করলে ওইসব অপরাধীর মানসিকতা এ রকম থেকেই যাবে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে নুসরাত জাহান রাফি। গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা। এই ছাত্রীর পরিবারের ভাষ্যে, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এরই জের ধরে মামলা করায় নুসরাতকে আগুনে পোড়ানো হয়। ওই মামলার পর সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু সবার প্রার্থনা-চেষ্টাকে বিফল করে না ফেরার দেশে চলে যায় নুসরাত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে