শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মদ্রিচদের প্রজন্মের ‘সোনালি’ ম্যাচ!

নকআউটে আজ ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ ডেনমাকর্
ক্রীড়া ডেস্ক
  ০১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ক্রোয়েশিয়ার সোনালি প্রজন্মের ফুটবলাররা। আজ ডেনমাকের্র বিপক্ষে জিতলে তারা উঠে যাবে বিশ্বকাপের কোয়াটার্র ফাইনালে। অনুশীলনে মদ্রিচ-রাকিতিচদের এই চেহারাই বলে দিচ্ছে কতটা আত্মবিশ্বাসী তারা Ñওয়েবসাইট

ক্লাব পযাের্য় লুকা মদ্রিচ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলেছেন বেশ কয়েকবার। এই অভিজ্ঞতা আছে ইভান রাকিতিচ আর মাতেও কোভাসিচেরও। তবে এদের তো নয়-ই, বিশ্বকাপের নকআউট পবের্ খেলার অভিজ্ঞতা নেই ক্রোয়েশিয়ার এই সেনালি প্রজন্মের কারোরই। আজ শেষ ষোলোতে ডেনমাকের্র বিপক্ষে ম্যাচটি তাই মদ্রিচদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূতর্ হতে যাচ্ছে। যে মুহ‚তর্টাকে মদ্রিচ বলেছেন, ‘সেনালি প্রজন্মের সোনালি মুহ‚তর্’।

ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলের জন্য ১৯৯৮ সালটি খুব গুরুত্বপূণর্ ছিল, ঐতিহাসিকও বটে। ওই বছর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রথমবার ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিল দলটি। আর বিস্ময় উপহার দিয়ে চলে গিয়েছিল সেমিফাইনালে। ডেভর সুকার-রবাটর্ জারনিদের দেখানো পথ ধরে আরেকটা সোনালি প্রজন্ম এলো। কিন্তু তাদের কাছ থেকে গত তিনটি বিশ্বকাপে কিছুই পায়নি ক্রোয়েশিয়া। প্রত্যেকবার ক্রোয়াটদের যাত্রা শেষ হয়েছে আক্ষেপ আর হতাশায়। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপ যেন ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। গ্রæপ পবের্ দাপুটে পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে মদ্রিচ-রাতিকিচরা এখন শেষ ষোলোতে। আজ ডেনমাকের্ক হারালেই নিশ্চিত কোয়াটার্র ফাইনাল।

ক্রোয়েশিয়া কি অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে? তা জানতে কিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসা দলটিকে শেষ আটের জন্য ফেভারিট ভাবাই যায়। তাদের প্রতিপক্ষ ডেনমাকের্ এক ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন ছাড়া বড় কোনো তারকা নেই। মাঝমাঠে তাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর জন্য তো অধিনায়ক লুকা মদ্রিচই যথেষ্ট! তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন রাকিতিচ-কোভাসিচরা। শুধু মাঝমাঠ নয়, রক্ষণ আর আক্রমণভাগেও রয়েছে ক্রোয়াটদের ভালো মানের ফুটবলার। আজেির্ন্টনার মতো দলকে তো আর এমনি এমনি হারিয়ে দেয়নি তারা!

রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার সোনালি প্রজন্মের পারফরম্যান্সেও সোনালি ঝলক। অথচ এই দলটিই ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপে গ্রæপ পবর্ থেকেই ছিটকে গিয়েছিল। আগের আসরে তারা মূলপবের্ খেলার যোগ্যতাই অজর্ন করতে পারেনি। একটা আক্ষেপ তো ছিলই তাতে। সবচেয়ে বেশি ছিল মদ্রিচের। হাল আমলের অন্যতম সেরা প্লেমেকার হয়েও দলের জন্য কিছু করতে পারছিলেন না। ২০০৬ সালে অভিষেক হওয়ার পর বিশ্বকাপে কেবল ব্যথর্তাই সঙ্গী হয়েছে তার। নামের পাশে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থাকা মদ্রিচ সেই আক্ষেপ থেকে বলেছিলেন, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জেতা ট্রফিগুলোর বিনিময়ে হলেও একটা বিশ্বকাপ চাই।

শুধু মদ্রিচ নয়, ক্লাবের ট্রফি বিনিময়ে একটা বিশ্বকাপ শিরোপা পেতে চাইবেন যে কেউ। একজন ফুটবলারের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু তো এটাই! কিন্তু বাস্তবতা হলো এমনি এমনি বিশ্বকাপ ট্রফি পাওয়া যায় না, শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে জিতে নিতে হয়। মদ্রিচের নেতৃত্বে ক্রোয়েশিয়া এখন পযর্ন্ত সঠিক পথেই আছে। নিজেও গোল করছেন, সতীথের্দর গোলেও রাখছেন অবদান। ডেনমাকের্র বিপক্ষেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবেন তিনি। এই বিশ্বকাপই হয়তো তার শেষ। তাই সাম্ভাব্য শেষটাকে রাঙাতেই চাইবেন তিনি। তার মতো এই প্রজন্মের আরও কয়েকজন ফুটবলারের জন্যও এটা হয়তো শেষ বিশ্বকাপ, সামথর্্য প্রমাণের শেষ সুযোগ। তাই তারাও নিজেদের উজাড় করেই খেলছেন।

২০ বছর আগে বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে রোমানিয়াকে হারিয়ে কোয়াটার্র ফাইনালে উঠেছিলেন জারনি-সুকাররা। সাবেকদের কাছ থেকে প্রেরণা খঁুজে আজকের ম্যাচে ভালো খেলে জয় উপহার দিতে চান এই প্রজন্মের ফুটবলার। যদিও বিশ্বকাপের নকআউট পবের্র প্রথম ম্যাচ ঘিরে তাদের মাথার ওপর বিরাজ করছে বিষম চাপ। তবে চাপ সামলানোর উপায়ও জানা আছে তাদের। মাঝমাঠের আরেক তারকা রাকিতিচ যেমন বলেছেন, ‘অবশ্যই, অনেক চাপ। কিন্তু প্রথম থেকেই আমি বলে আসছি, যেহেতু আমরা এই টুনাের্মন্টের জন্য একসঙ্গে জড়ো হয়েছি, তখন এটা উপভোগ করাই শ্রেয়। কারণ, এটা বিশ্বকাপ। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, নিজেদের ভক্ত-সমথর্কদের খুশি করতে সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, উপভোগ করতে হবে নিজেদের খেলাটাকে।’

ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ ডেনমাকের্র প্রেরণাতেও ১৯৯৮ সালের আসর। সেবার কোয়াটার্র ফাইনাল পযর্ন্ত গিয়েছিল তারা। ওটাই বিশ্বকাপে তাদের সবোর্চ্চ অজর্ন। দেখা যাক, নোভগোরদে শেষ হাসিটা হাসে কোন দল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে