নতুন বছরের শুরুতেই ওষুধের দাম বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো। ওষুধের দাম কমাতে মাকির্ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহŸান সত্তে¡ও আড়াই শতাধিকের বেশি প্রেসক্রিপশন ড্রাগের (ব্যবস্থাপত্রের ওষুধ) দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো, যার মধ্যে বিশ্বের শীষর্ বিক্রীত ওষুধ হিউমাইরা রয়েছে। তবে এখন পযর্ন্ত ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির গতি গত বছরের তুলনায় কিছুটা মন্থর। খবর রয়টাসর্।
মাকির্ন প্রেসিডেন্টের কারণে ওষুধের দাম ধরে রাখা নিয়ে চাপের মুখে রয়েছে ফামাির্সউটিক্যাল শিল্পটি। এ মুহূতের্ বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ফামাির্সউটিক্যাল বাজারটির ভোক্তাদের জন্য ওষুধের ব্যয় কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে ট্রাম্প প্রশাসন।
বুধবার হোয়াইট হাউসে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ওষুধের দাম উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে বলে তিনি আশা করছেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সাভিের্সস (এইচএইচএস) মন্ত্রী অ্যালেক্স অ্যাজার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আরএক্স সেভিংস সলিউশনের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ৪০০টির বেশি ওষুধের দাম বাড়িয়েছিল। সে তুলনায় চলতি বছর সামগ্রিকভাবে এক-তৃতীয়াংশ কম সংখ্যক ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভোক্তাদের স্বাস্থ্য পরিকল্পনা এবং কমীের্দর কম খরচে প্রেসক্রিপশন ওষুধ পেতে সহায়তা করে থাকে আরএক্স সেভিংস সলিউশন।
ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছে আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ফামাির্সউটিক্যাল কোম্পানি অ্যালাগের্ন। আরএক্স সেভিংসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৫০টির বেশি ওষুধের ন্যূনতম মূল্য বাড়িয়েছে কোম্পানিটি। আর এসব ওষুধের সিংহভাগেরই দাম ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে তারা।
মাকির্ন বায়োফামাির্সউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাবভাই ইনকরপোরেশন তাদের সবচেয়ে কাটতি ওষুধ হিউমাইরার ন্যূনতম দাম ৬ দশমিক ২ শতাংশ বাড়িয়েছে। রিউমাটয়েড আথ্রার্ইটিসের চিকিৎসায় ওষুধটি ব্যবহৃত হয়। প্রাথমিক হিসাবে, গত বছর রেকডর্ ২ হাজার কোটি ডলারের হিউমাইরা বিক্রি করেছে অ্যাবভাই।
এক বিবৃতিতে অ্যালাগের্ন জানিয়েছে, চলতি বছর কোম্পানির পোটের্ফালিওর ওষুধগুলোর ন্যূনতম গড় মূল্যবৃদ্ধি দঁাড়াবে প্রায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। কোম্পানিটি আরো জানিয়েছে, ওষুধের দাম বাড়ানো হলেও উচ্চ রিবেট এবং মূল্যছাড়ের কারণে চলতি বছর এ পদক্ষেপ থেকে কোনো নিট মুনাফার আশা করা হচ্ছে না।
ওষুধের দাম বাড়ানো নিয়ে অ্যাবভাইয়ের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে চলতি মাসে আরো দাম বাড়ার আশা করা হচ্ছে। গত বছরের এক প্রতিবেদনে রয়টাসর্ জানায়, প্রায় ৩০টি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি তাদের ওষুধের ন্যূনতম দাম বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। আর এখন পযর্ন্তদাম বাড়ানোর সব ঘোষণা আসেনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম বাজার প্রতিযোগিতার ওপর নিভর্রশীল। ফলে যেসব দেশে সরকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দাম নিয়ন্ত্রণ করে তার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, যা বাজারটিকে ওষুধ প্রস্তুতকারকদের কাছে লোভনীয় করে তুলেছে।
ওষুধের দাম কমানোর লক্ষ্যে নীতি পরিবতের্নর প্রস্তাব দিয়েছে এইচএইচএস। স্বাস্থ্যবীমা প্রতিষ্ঠানগুলো ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে যে মূল্যছাড় পেয়ে থাকে তা ভোক্তাদের মধ্যে বণ্টনের প্রস্তাব করেছে তারা। কিন্তু এসব পদক্ষেপ থেকে ভোক্তারা স্বল্পমেয়াদে কোনো সুবিধা পাবে বলে মনে হচ্ছে না। এছাড়া এসব পদক্ষেপের ফলে সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর হাতে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ বা আলোচনা করার সরাসরি ক্ষমতাও আসবে না।
আরএক্স সেভিংসের প্রধান নিবার্হী মাইকেল রিয়া বলেন, ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য এটা কেবল ব্যবসা। তার মতে, ওষুধের দাম নিচে নামিয়ে আনার জন্য নতুন নীতিমালার চেয়ে বাজারে অথর্পূণর্ পরিবতর্ন সবচেয়ে বেশি জরুরি।