কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের গুরুত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। অন্য সরকারি ব্যাংকগুলো তাদের কৃষিঋণ বাড়ালেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেশ পিছিয়ে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের ১০ মাস অতিক্রম হলেও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জন করতে পারেনি ব্যাংকটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এই অর্থবছরে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সোনালী ব্যাংকের। কিন্তু এপ্রিল শেষে অর্জন হয়েছে মাত্র ৪৮ শতাংশ। তবে ইতোমধ্যেই অন্যান্য ব্যাংকগুলো ৮৫ শতাংশের বেশি ঋণ বিতরণে সক্ষম হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। একই সময়ে অন্য সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে রূপালী ব্যাংক পূরণ করেছে ৯৫ শতাংশ, জনতা ব্যাংক ৯৪ শতাংশ, অগ্রণী ব্যাংক ৮৮ শতাংশ, বেসিক ব্যাংক ৮৫ শতাংশ ও বিডিবিএল-এর অর্জন ১১০ শতাংশ।
বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে কৃষি। ২০১৮ সালের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষার তথ্যমতে, এটি মোট শ্রমশক্তির ৪০.৬ ভাগ জোগান দিয়ে থাকে এবং দেশের জিডিপিতে এর অবদান ১৪.১০ শতাংশ। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় এই খাতের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, কৃষিঋণের একটি অংশ শ্রেণিকৃত হয়ে পড়েছে। এপ্রিল শেষে এ খাতে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ১৮০ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ শতাংশ।
\হশ্রেণিকৃত ঋণের মধ্যে সরকারি ৮ ব্যাংকেরই ৪ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রেণিকৃত ঋণ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে (বিকেবি)। বিকেবিতে শ্রেণিকৃত কৃষি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। এটি বিতরণকৃত ঋণের ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ ছাড়া রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণ ৭২০ কোটি টাকা।
একই সময়ে সোনালী ব্যাংকের কৃষি খাতে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ১ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।