রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাণিজ্য মেলায় ১৩০ টাকায় মিলছে ক্রোকারিজ পণ্য

যাযাদি ডেস্ক
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:০৪
বাণিজ্য মেলায় ১৩০ টাকায় মিলছে ক্রোকারিজ পণ্য

শেষ সময়ে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। এবারের মেলায় বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে শোভা পেয়েছে নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মেলা উপলক্ষে এসব জিনিসপত্র বিভিন্ন ছাড়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ক্রোকারিজ পণ্যের স্টলে ভিড় করছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। মাত্র ১৩০ টাকায় মিলছে যে কোনো ক্রোকারিজ পণ্য। শনিবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আল্লাহর দান ক্রোকারিজ কর্নারে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

জানা যায়, স্টলটিতে চামচ, ছুরি, কাটার, মেলামাইনের প্লেট, মেলামাইনের গামলা, ছাকনিসহ নানা পণ্য একই দামে বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই নিজেদের চাহিদামতো পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এ স্টল থেকে।

স্টলটিতে কেনাকাটা করতে আসা আমরিন জামান নামে এক ক্রেতা জানান, ‘ব্যস্ততার কারণে এতদিন মেলায় আসা হয়নি। মেলায় এসে ক্রোকারিজ পণ্যের এই স্টলটি চোখে পড়লো। দেখলাম মেলা উপলক্ষে ক্রোকারিজ পণ্যে অনেক ছাড় চলছে। তাই কিছু জিনিসপত্র কিনে নিয়ে যাচ্ছি।’

রুমি আক্তার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এই স্টলে কম দামে পাচ্ছি। তাই বাসার জন্য কয়েকটি প্লেট ও কাটার কিনেছি। গতবার মেলায় এসেও এসব জিনিসপত্র আমার কেনা হয়েছিল।’

টেলিভিশনে আকর্ষণীয় ছাড়

মেলা উপলক্ষে অন্যান্যবারের মতো এবারও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টেলিভিশনে চলছে আকর্ষণীয় নানা অফার। ফলে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টেলিভিশন।

সরেজমিন দেখা যায়, ওয়ালটনের বড় এলইডি টেলিভিশন ১ লাখ ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ৯৯ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের এলইডি টেলিভিশন ৪৫ হাজার ৯৩৫ টাকার পরিবর্তে ৪৩ হাজার ৬৯৯ টাকা, ৫৯ হাজার ৯৯০ টাকার এলইডি ৫৬ হাজার ৯০৫ টাকা, বড় সাইজের এলইডি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকার পরিবর্তে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া যমুনার ৩২ ইঞ্চি এইচডি টেলিভিশন মাত্র ১৩ হাজার ৫৭৫ টাকায়, ৫৫ ইঞ্চি ফোর কে টেলিভিশন ৭৯ হাজার ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৫৫ হাজার ৮৬০ টাকা, ৩২ ইঞ্চি স্মার্ট টেলিভিশন ২৩ হাজার ২০০ টাকার পরিবর্তে ১৭ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া ভিস্তা, ভিশন, মিনিস্টারসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টেলিভিশন ১০ থেকে ২০ শতাংশ ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে।

রায়হান হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে টেলিভিশন কেনার চিন্তা করছিলাম। পরে ভাবলাম মেলা উপলক্ষে যেহেতু টেলিভিশনে অফার চলছে তাই মেলায় চলে আসলাম।’

বিল্লাল হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘প্রত্যেকটি টেলিভিশনই দেখতে অনেক সুন্দর। কোনটা রেখে যে কোনটা কিনবো কনফিউশন হয়ে গেছি। সাধ্যের মধ্যে যে টেলিভিশন কেনা যায় তাই কিনবো ভাবছি।’

ওয়ালটনের ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘সবসময়ের মতো এবারও আমাদের টেলিভিশনগুলো মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগ্রহের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। মেলা উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন অফার নিয়ে হাজির হয়েছি। কোনো ক্রেতা চাইলে এখানে অর্ডার করে কাছের কোনো শোরুম থেকে পণ্য বুঝে নিতে পারবেন।’

এক কলমের দাম সাড়ে ৩ হাজার টাকা

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় একটি কলম সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ২ হাজার টাকা দামেরও কলম রয়েছে। এসব কলম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মেলার পেনটেল প্যাভিলিয়নে এসব কলম বিক্রি হচ্ছে।

শনিবার মেলায় দেখা যায়, পেনটেল প্যাভিলয়ন মূলত কলম বিক্রির প্যাভিলিয়ন। এখানে নানা রকমের কলম পাওয়া যাচ্ছে। ৩০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৩ হাজার টাকা দামের কলম পাওয়া যাচ্ছে।

প্যাভিলিয়নের দায়িত্বে থাকা ক্যাশিয়ার মো. রাসেল বলেন, ‘সাড়ে ৩ হাজার টাকার কলম এখন ৩ হাজার টাকায় আমরা বিক্রি করছি। দাম বেশি হলেও আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।’

রাসেল আরও বলেন, ‘বেশি দামে কলম মূলত করপোরেট লেভেলের মানুষজন কিনে থাকেন। তারা মোটামুটি কিনছেনও। এছাড়াও কম দামের কলমেরও ব্যাপক চাহিদা আছে।’

শুধুমাত্র লেখালেখির জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকায় কলম কেনা টাকা লস করা ছাড়া কিছুই নয় বলে জানান প্যাভিলিয়নে কলম কিনতে আসা মো. আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘লেখালেখির জন্য এত দাম দিয়ে কলম কেনা অসম্ভব। তবে যারা কোটিপতি আছেন তাদের কাছে ৫ হাজার টাকার কলমও কিছুই নয়।’

স্টলটির ইনচার্জ সুমন হোসেন বলেন, ‘শুরুর দিকে ক্রেতাদের চাপ না থাকলে বর্তমানে ক্রেতাদের ভালো চাপ রয়েছে। আশা করছি, গতবারের তুলনায় এবার বিক্রি ভালো হবে।’

মেলায় এবার যাতায়াতের সুবিধার জন্য মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ফার্মগেট থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উত্তরা ও মতিঝিল থেকে যারা মেলায় আসবেন তারা মেট্রোরেলে এসে ফার্মগেট থেকে বাসে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সোজা মেলায় চলে আসতে পারেন সেই সুবিধা রাখা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসের ডেডিকেটেড সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন এ বাস সার্ভিস চালু থাকবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে