দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও (এনবিএফআই) ভয়াবহ আকারে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশই খেলাপি হয়ে গেছে। টাকার অঙ্কে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৭,১৮৯ কোটি টাকা, যা তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২,১০০ কোটি এবং বছরে বেড়েছে ৩,৩০০ কোটি টাকা।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অবলোপন, পুনঃতফসিল আর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে খেলাপির প্রকৃত চিত্র আড়াল রাখা হয়েছিল। তবে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারিতে চেপে রাখা খেলাপি ঋণ এখন প্রকাশ পাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণের মোট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৩১ শতাংশ।
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে এই খাতের ঋণ স্থিতি ছিল ৭৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, যার মধ্যে খেলাপি ছিল ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা বা ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
পিপলস লিজিং, বিআইএফসি, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্সসহ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপির হার সর্বাধিক। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক তারল্য ও ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে।
এদিকে মার্চ পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণও বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২৪ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আসল পরিস্থিতি সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।