জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৯ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও ১০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
সোমবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কাউন্সিল কক্ষে বিশেষ এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিন্ডিকেট সভা বেলা ১১টা থেকে চলে রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত।
৯ জন শিক্ষককে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে অধিকতর তদন্তের জন্য স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা হলেন- সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ ইস্রাফিল আহমেদ রঙ্গন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ. স. ম. ফিরোজ-উল-হাসান, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শেখ হাসিনা হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ হোসনে আরা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ নাজমুল হোসেন তালুকদার, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক তাজউদ্দীন শিকদার ৷
এছাড়াও ১৫-১৭ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১০ জন শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতা ও অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তারা হলেন-অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রভাষক কানন কুমার সেন, ইন্সটিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক পলাশ সাহা, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম খোন্দকার, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছায়েদুর রহমান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার খসরু পারভেজ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিবুর রৌফ শৈবাল, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক এ এ মামুন৷
এদিকে অবসরে যাওয়া সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসানের পেনশন বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাছাড়া জুলাই হামলার ঘটনায় দুজন কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলো নাহিদুর রহমান খান, রাজীব চৌধুরী এবং হল এটেন্ডডেন্ট মুহসিন।
বিশেষ এ সিন্ডিকেট সভায় গত ১৫ জুলাই রাতে জুলাই আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত হামলার প্রত্যক্ষ মদদদাতা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে এ সকল তথ্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।
এছাড়া সিন্ডিকেট সভায় জুলাই আন্দোলনের হামলার ঘটনায় জড়িত ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে তিন প্রকারে শাস্তি প্রদান করেছে প্রশাসন। তা হলো ছাত্রত্ব শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল, চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসা শিক্ষার্থীদের ফলাফল স্থগিত এবং চলমান শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার।
যাযাদি/ এসএম