সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

জ্যোতি ছড়াচ্ছেন তমা

মাতিয়ার রাফায়েল
  ০৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
তমা মির্জা

ঢালিউডে ফর্মুলা ছবির নায়িকা হিসেব তমা মির্জা শুরু করেছিলেন। নাচ-গান-অভিনয়-ফিটনেস কোনো কিছুতেই কমতি নেই তার। তারপরেও ঠিক কী কারণে যেন ধারাবাহিক হতে পারছিলেন না। যদিও ২০১৫ সালে শাহনেওয়াজ কাকলী পরিচালিত 'নদীজন' ছবিতে অভিনয় করে পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তার আগে ২০১০ সালে এম বি মানিক পরিচালিত 'বলো না তুমি আমার' ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে তমা মির্জার। তবে চলচ্চিত্রাভিনেত্রী তমা মির্জা চলচ্চিত্রে এসেছেন শাহিন-সুমনের হাত ধরে। শাহিন-সুমন পরিচালিত 'মনে বড় কষ্ট' ছবিতে পার্শ্বনায়িকা হিসেবে অভিনয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেন তমা মির্জা। এরপর বেশ কিছু চলচ্চিত্রে পার্শ্বনায়িকা হিসেবে অভিনয় করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন দর্শকদের। তবে ২০১২ সালে অনন্ত হীরা পরিচালিত 'ও আমার দেশের মাটি' চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করে আলোচিত হন তিনি। এ ছাড়াও তিনি শাহাদাৎ হোসেন লিটনের 'অহংকার', দেবাশীষ বিশ্বাসের 'চল পালাই', রয়েল খানের 'গেইম রিটার্নস' ও মারিয়া তুষারের 'গ্রাস', সাদাত হোসাইনের

গহিনের গান চলচ্চিত্রে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। তবে নানা কারণে অভিনয়ে তিনি বারবারই ছন্দ ধরে রাখতে পারছিলেন না। মাঝে কেটে যায় তার পারিবারিক অস্থিরতাও। আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়ও। চলে গিয়েছিলেন আইসোলেশনে। যে স্বামীকে পেয়ে তমা মির্জা বলেছিলেন 'বিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবতী স্ত্রী'- সেই তমা মির্জারই এর কিছুদিন পরই মোহভঙ্গ ঘটে। কানাডার নাগরিক হিশাম চিশতির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং তার পরবর্তী ঘটনার কারণে যেন কিছুদিন শোবিজ থেকে নেপথ্যে চলে যান তমা মির্জা।

তবে তার সেই স্থবিরতা কাটিয়ে ক্যারিয়ারের একযুগের মাথায় ফের চমকে দিলেন তিনি সমালোচকদের। দেখালেন নিজের অভিনয় দু্যতি। রায়হান রাফীর 'সুড়ঙ্গ' সিনেমায় আবারও বাজিমাত করলেন। আর এ সিনেমার মাধ্যমেই প্রায় তিন বছর পর রুপালি পর্দায় দেখা দেন তমা। ঈদে মুক্তি পাওয়া চরকি ও আলফা আই স্টুডিওজ লিমিটেডের যৌথ প্রযোজনার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের এই সিনেমাটি এখন আলোচনায়। এতে তমা মির্জার সঙ্গে অভিনয় করেছেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। ওটিটি, টিভি, ইউটিউব- নানান মাধ্যমের বিভিন্ন কনটেন্টের জন্য বহুবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন নিশো। তবে বড় পর্দা অর্থাৎ, প্রেক্ষাগৃহের সিনেমার জন্য এই ছবিটির মধ্য দিয়েই প্রথম তিনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর দেখা দিলেন ঈদে রুপালি পর্দায়। এমন একটি ওয়েব ঘরানার সিনেমা হওয়ায় তমা মির্জা নিজেও স্বীকার করে বলেন, 'এই সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য নিশো ভাইই আমার কাজটাকে আরও সহজ করে দিয়েছেন। তিনি এত ভালো একজন অভিনেতা। তার জায়গায় তো তিনি স্টার। এত অভিজ্ঞ একজন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছি, কিন্তু তার মধ্যে সেই গাম্ভীর্য, জড়তা কিছুই পাইনি- যদিও তার সঙ্গে আমার প্রথম কাজ এটা।'

তবে তরুণ নির্মাতা রায়হান রাফীর সঙ্গে কাজ বলতে এই প্রথম নয়। এর আগে রায়হান রাফীর ওয়েব সিনেমা 'খাঁচার ভেতর অচিন পাখি'ই ছিল তার বড় টিভিসি। সেই প্রথম রায়হান রাফীর 'খাঁচার ভেতর' আটকা পড়েন তমা মির্জা। এরপর একই নির্মাতার আরও একটি ওয়েব সিনেমা '৭ নাম্বার ফ্লোর' দিয়ে চমকে দেন তমা। প্রমাণ করেন, ফর্মুলা ছবির নায়িকা হলেও অভিনয়ের সুযোগ পেলে তিনিও পারেন। আর রায়হান রাফীর মতো বাজিমাত করা নির্মাতার হাতে পড়লে তো কোনো কথাই হয় না। ওয়েব সিনেমার সেই ধারাটিই সচল রাখছেন মির্জা পরিবারের এই অভিনেত্রী। ওয়েব সিনেমা ঘরানার গল্গে যেন তাকেই বেশি মানিয়ে যায়। রায়হান রাফীর '৭ নাম্বার ফ্লোর' ওয়েব সিনেমার পর করলেন আরও একটি ওয়েব সিনেমা। যেটি বানিয়েছেন 'ঊনলৌকিক'-খ্যাত পরিচালক রবিউল আলম রবি। নাম 'ক্যাফে ডিজায়ার'। যার অন্যতম 'প্রিয়া' চরিত্রে অভিনয় করেছেন তমা মির্জা।

২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর ওটিটি পস্ন্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাওয়া এই ওয়েব সিনেমাটিতে তমা মির্জার চমৎকার অভিনয় দর্শককে বেশ নাড়িয়ে দেয়। মুগ্ধ হয়ে পড়েন দর্শক-সমালোচক।

তমা মির্জা নিজেই বলেন, 'সুড়ঙ্গ সিনেমাতে আমরা দুজন মাসুদ ও ময়না চরিত্রে অভিনয় করেছি। পর্দার মাসুদ ও ময়না হয়ে ওঠার যে জার্নি, এটা আমাদের সারা জীবন মনে থাকবে। ছবি দেখলেই দর্শক বুঝতে পারবে, এই জার্নি কেন আলাদা। একটা কথা স্ট্রংলি বলতে চাই, সবকিছু মিলিয়ে ছবিটা আমার জীবনে বিশেষ হয়ে থাকবে।'

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে