আজকের যায়যায়দিন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আট দফার বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ আজ। এ দফায় সবচেয়ে বেশি তারকা প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাই বলা যায়, এক কথায় জমজমাট পর্ব দেখতে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গবাসী। কারণ, এদিনই ভাগ্য নির্ধারণ হবে বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো তারকা থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা প্রার্থীদের। পায়েল সরকার, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, যশ দাশগুপ্ত, লাভলি মৈত্র, কাঞ্চন মলিস্নক, অঞ্জনা বসুর মতো তারকা প্রার্থীরাও লড়ছেন এ দফায়। সংবাদসূত্র :ডিডবিস্নউ নিউজ, পিটিআই

এছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, আবদুল মান্নান, মহাম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীর মতো ঝানু রাজনীতিকরা জিতবেন কিনা, তাও ঠিক হবে এ পর্বে। রাজনীতিতে নাম লেখানো সাবেক ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি, সাবেক ফুটবলার বিদেশ বসু সফল হবেন কিনা, তাও ঠিক হবে আজ। আর দল বদল করে বিজেপিতে যাওয়া সাবেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালী ডালমিয়ার আসনেও ভোট হবে এদিন।

এদিকে, তারকাদের ছড়াছড়ি ছাড়াও আরও দুটি কারণে এ পর্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দুই পর্বে ভোট হয়েছিল মূলত বিজেপি যেসব জায়গায় শক্তিশালী সেখানে। তৃতীয় পর্বের ভোট হয় তৃণমূলের শক্ত জমিতে। এবার বিজেপি ও তৃণমূল দুই তরফেরই শক্তিশালী এলাকায় ভোট হবে। পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন নেতার ভাগ্যপরীক্ষা হবে। সে জন্যই চতুর্থ পর্বের ভোট বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। এছাড়া চার পর্বের ভোট হওয়া মানে আট পর্বের ভোটের মাঝামাঝি পৌঁছে যাওয়া।

চতুর্থ দফায় মোট ৪৪টি আসনে ভোট হবে। প্রথম দুই দফায় হয়েছিল ৩০টি করে আসনে। আর তৃতীয় দফায় ৩১টি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এবারই সবচেয়ে বেশি আসনে ভোট হবে। এর মধ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতে তৃণমূল ও বামদের প্রভাব আছে। বিজেপি সেই প্রভাব ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করছে। আর উত্তরবঙ্গের দুই জেলা কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভোট। সেখানেও বিজেপির প্রভাব বেশি।

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন / বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়েছে আমেরিকায়

তবে এ পর্বে সবচেয় চিত্তাকর্ষক লড়াই হবে টালিগঞ্জে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়র। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে চালু কথাই হলো, অরূপ ও তার ভাই স্বরূপ টলিউড শাসন করেন। বাবুলকে দাঁড় করিয়ে সেই শাসন ভাঙতে চাইছে বিজেপি। বাবুলের হয়ে মিঠুন চক্রবর্তী 'রোড শো' করেছেন। অরূপের হয়ে প্রচারণা করেছেন জয়া বচ্চন।

অবশ্য বেহালা পশ্চিমের লড়াইও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুখ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন নায়িকা শ্রাবন্তী। তার ক্যারিশমা না কি পার্থের মতো ঝানু রাজনীতিকের জনপ্রিয়তার জয় হয়, তা জানতে কৌতূহল চরমে।

বেহালা পূর্বেও সাবেক মন্ত্রী, কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর রত্নার বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী টলি-নায়িকা পায়েল সরকার। তারকা বনাম রাজনীতিকের আরেকটি লড়াই হচ্ছে হুগলির চন্ডীতলায়। সেখানে সিপিএমের মহাম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির তারকা প্রার্থী যশ দাশগুপ্ত।

প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং বিদায়ী বিধানসভার বিরোধী নেতা আবদুল মান্নান তার আগের চাঁপাদানি আসন থেকেই লড়ছেন। সুজনও তার গতবারের জেতা যাদবপুর আসনে প্রার্থী। এবারও তারা নিজেদের আসনে জিততে পারেন কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।