শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
পশ্চিমবঙ্গে ষষ্ঠ দফার ভোট আজ

টিকে থাকার লড়াইয়ে বাম-কংগ্রেস

ম এ দফার ৪৩ আসন নিয়ে বড় আশা, স্বপ্ন দেখছে বিজেপিও ম ষষ্ঠ দফায় লড়ছেন ৩০৬ প্রার্থী, ২১ শতাংশ কোটিপতি
ম যাযাদি ডেস্ক
  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোট ঘিরে তৃণমূল-বিজেপির বাইরে এবার অনেকটাই পাদপ্রদীপের বাইরে বাম-কংগ্রেস জোট। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গে শক্তি যত বাড়ছে ততই কমছে জোটের। প্রচার-প্রচারণাতেও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না তাদের। এদিকে, রাজ্যটিতে আজ ষষ্ঠ দফায় চার জেলার ৪৩টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া বাম-কংগ্রেস জোট কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এদিন। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ

এ দফায় ভোট হতে যাওয়া আসনগুলোর মধ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে একটিতে না জিতলেও ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে চমকপ্রদ উত্থান ঘটেছিল বিজেপির। ২০১৬ সালের তৃণমূলের সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও তিন বছরের মাথায় ২০১৯ এ আলাদা লড়ে তাদের জনসমর্থন তলানিতে ঠেকেছিল।

ষষ্ঠ দফায় উত্তর দিনাজপুরের ৯টি বিধানসভা আসনের সবগুলোতেই ভোট হবে। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনার ৩৩টির মধ্যে ১৭, নদিয়ার ১৭টির মধ্যে ৯ এবং পূর্ব বর্ধমানের ১৬টির মধ্যে ৮ আসনেও ভোট হবে এদিন।

২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই ৪৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ৩২টিতে। এছাড়া জোট বেঁধে লড়ে কংগ্রেস ৭ এবং বামেরা ৪টি আসনে জেতে। ওই নির্বাচনে বিজেপি একটি আসনেও জিততে পারেনি। পরবর্তীতে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জেতা উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, কালিয়াগঞ্জ এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার নোয়াপাড়ার মতো আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। আবার অর্জুন সিংহের দলবদলের জেরে উপনির্বাচনে বিজেপির কাছে উত্তর চব্বিশ পরগনার ভাটপাড়া খোয়াতে হয় তৃণমূলকে।

৩ বছর পরে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসেবে তৃণমূল চার জেলার ওই ৪৩টি আসনের মধ্যে ২৪টিতে এগিয়ে রয়েছে। ১৯টি আসনে এগিয়ে থেকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। আলাদাভাবে লড়ে বাম এবং কংগ্রেস একটি আসনেও প্রথম স্থানে যেতে পারেনি। কেন্দ্রওয়াড়ি ফল বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়ায় অগ্রগতি তুলনায় কম হলেও অন্য দুই জেলায় অর্থাৎ উত্তর দিনাজপুর এবং উত্তর চব্বিশ পরগনায় চমকপ্রদ উত্থান ঘটেছে পদ্ম শিবিরের।

২০১৬ সালে ওই ৪৩টি আসন মিলিয়ে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৪.৮৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি ১০.৭৪ এবং বাম-কংগ্রেস জোট ৩৯.২৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের ভোট সামান্য কমে হয়েছে ৪২.৫৮ শতাংশ। বিজেপির প্রায় ৪ গুণ বেড়ে হয়েছে ৪০.৮৫ শতাংশ।

আর আলাদা লড়ে বামেরা ৯.৭৫ এবং কংগ্রেস ৩.৭১ শতাংশ ভোট পেয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের দু'বছর বাদে ফের জোট করার পরে বাম-কংগ্রেসের সামনে প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনাই এবার মূল চ্যালেঞ্জ।

উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০১৬ সালে তৃণমূল জিতেছিল ৪টিতে। বাম-কংগ্রেস জোট ৫টি। এর মধ্যে কংগ্রেস ৩, সিপিএম ১ এবং ফরওয়ার্ড বস্নক ১টি আসন দখল করেছিল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফল জানাচ্ছে, তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ৫টিতে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের জেতা আসন রায়গঞ্জসহ ৪টি আসনে এগিয়ে গেছে ৩ বছর আগে খাতা খুলতে না পারা বিজেপি।

ষষ্ঠ দফায় ভোট হতে যাওয়া নদিয়ার ৯টি আসনের মধ্যে ২০১৬তে তৃণমূল জিতেছিল ৮টিতে। কালীগঞ্জ গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের হিসেব বলছে, কংগ্রেসের জেতা কালীগঞ্জে তৃণমূল এগিয়ে গেলেও কৃষ্ণনগর-উত্তর, কৃষ্ণনগর-দক্ষিণ এবং তেহট্টে শীর্ষদল হয়ে গেছে বিজেপি। ৩ বছরের ব্যবধানে পাশের জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনার ১৭টি বিধানসভা আসনে পরিবর্তনের স্রোত ছিল আরও তীব্র। আজ ভোট হতে যাওয়া এই আসনগুলোর মধ্যে ২০১৬-এ তৃণমূল জিতেছিল ১৩টিতে। কংগ্রেস ৩ এবং সিপিএম ১টিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল জানাচ্ছে, তৃণমূল ৭ এবং বিজেপি ১০টি-তে এগিয়ে। ব্যারাকপুর, বীজপুরের মতো শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি বাগদার মতো গ্রামীণ কেন্দ্রেও জোড়াফুলকে পেছনে ফেলেছে পদ্ম।

এদিকে, ষষ্ঠ দফায় লড়ছেন ৩০৬ প্রার্থী। তাদের মধ্যে ২১ শতাংশ কোটিপতি। এই তালিকায় তৃণমূলের রয়েছে ২৮ জন, বিজেপির ১৯ জন এবং কংগ্রেসের ২ জন। এছাড়া ফৌজদারি মামলা আছে ২৮ শতাংশের বেশি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। নিরক্ষর থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর নানা যোগ্যতার প্রার্থী রয়েছেন এ দফায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে