শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
তীব্র জ্বালানি সংকট

আবারও স্কুল বন্ধ শ্রীলংকায়

ম যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০

জ্বালানি সংকট চরম আকার ধারণ করায় স্কুল বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছে শ্রীলংকার সরকার। দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, ৪ জুলাই থেকে আরও এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারিসহ সব ধরনের স্কুল। শ্রীলংকার শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেছেন, আগামী গ্রীষ্মকালীন ছুটির মেয়াদে সিলেবাস সম্পূর্ণ করা হবে। ব্যাপক জ্বালানি সংকটের মধ্যে পড়ে এর আগে, গত ১৮ জুন দুই সপ্তাহের জন্য সরকারি অফিস ও স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত শ্রীলংকা সরকার। সংবাদসূত্র : এএনআই

গত কয়েক মাস ধরেই চরম আর্থিক সংকটের মুখে রয়েছে শ্রীলংকা। করোনা মহামারির মধ্যে পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ায় এবং বিদেশি ঋণের চাপে দেউলিয়া হয়ে গেছে প্রতিবেশী এই দেশটি। সংকট কাটাতে একাধিকবার জ্বালানি ও আর্থিক সাহায্য করা হলেও কিছুতেই তা কাটিয়ে উঠতে পারছে না শ্রীলংকা। ফলে চরম আর্থিক ও জ্বালানি সংকটে প্রভাবিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের জনজীবনও। কর্মীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পর এবার বন্ধ করা হলো স্কুল। সোমবার থেকেই এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে শ্রীলংকার সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির সংবাদমাধ্যম 'ডেইলি মিরর' জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, 'দীর্ঘ সময় ধরে বিদু্যৎ না থাকার কারণেই কলম্বো ও অন্যান্য শহরের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল আগামী এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'

শ্রীলংকার শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সিলেবাসে যে ঘাটতি তৈরি হবে, আগামী ছুটির দিনে তা পূরণ হয়ে যাবে। শ্রীলংকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নিহাল রানাসিংহে স্কুলগুলোকে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করতে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিবহণ সমস্যাগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অধ্যক্ষদের প্রভাবিত না করলে চলমান পরিস্থিতিতে বিভাগীয় পর্যায়ের স্কুলগুলোকে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হবে।

অনলাইন পাঠদানের সুবিধার্থে সপ্তাহের কর্মদিবসগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ না করার বিষয়ে শ্রীলংকার 'পাবলিক ইউটিলিটি কমিশন' (পিইউসিএসএল) সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সচিব নিহাল রানাসিংহে।

এর আগে গত মার্চ মাসে কাগজ সংকটের কারণে বাতিল করা হয়েছিল পরীক্ষা, এবার বন্ধ হলো স্কুল। শিক্ষাব্যবস্থায় চলমান সংকটের প্রভাবটা বেশ স্পষ্ট। আর্থিক সংকট, জ্বালানি সংকট সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে শ্রীলংকা সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক পরিষেবা।

উলেস্নখ্য, ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলংকা। করোনা মহামারি, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত তলানিতে নেমে যাওয়ায় শ্রীলংকায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

জ্বালানি, খাবার ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না শ্রীলংকা। ডিজেলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রয়োজনীয় বিদু্যৎ উৎপাদন করতে পারছে না শ্রীলংকার বিদু্যৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। ফলে গত কয়েক মাস ধরে সেখানে দিনের বেশির ভাগ সময়ই বিদু্যৎ থাকছে না।

বর্তমানে শ্রীলংকার জ্বালানি তেলের পাম্পে সেনা পাহারা বসানো হয়েছে। যারা জ্বালানি কিনতে আসছেন, সেনা সদস্যদের কাছ থেকে টোকেন নিয়ে পাম্পের সামনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। পাম্পে তেলের সরবরাহ এলে তবেই পেট্রোল, ডিজেল কিনতে পারছেন তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে