সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
অনাস্থা প্রস্তাব

কংগ্রেস-তৃণমূলের দ্বন্দ্ব মিটেছে

যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

খাদের কিনার থেকে আবার সুরক্ষা বলয়ে ফিরে এলো ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি বিরোধী নতুন জোট 'ইনডিয়া'র অভ্যন্তরীণ ঐক্য। দিনের শেষে বিরোধী নেতারা বললেন, সব ভালো যার শেষ ভালো। সেই সঙ্গে এটাও বলা হচ্ছে, কোথাও কোনো টোল নেই। ঐক্যবদ্ধভাবে এগোচ্ছে 'টিম ইনডিয়া'। সংবাদসূত্র : এবিপি নিউজ

জোট ইনডিয়ার বৈঠকের আগেই কংগ্রেস নিজ দায়িত্বে গৌরব গগৈকে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সই করিয়ে স্পিকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয় তৃণমূলের সঙ্গে। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কংগ্রেস নেতৃত্ব এ কারণে ক্ষমাও চেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি কেন কংগ্রেস এই কাজ করল তার ব্যাখ্যাও তারা দিয়েছে বৈঠকে।

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময়। কংগ্রেস সূত্র (সোর্স) জানিয়েছেন, কংগ্রেস সভাপতি মলিস্নকার্জুন খাড়্‌গের ঘরে বিরোধীদের বৈঠকে এই প্রস্তাবে একমত হয় সব বিরোধী দল। তৃণমূলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন।

কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, সুদীপ একমত হলেও ডেরেক বৈঠকে জানান, এ ব্যাপারে নিজেদের মত জানাতে তৃণমূলের কিছুটা সময় লাগবে। ফলে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। বৈঠকের শেষে কংগ্রেস এমপি জয়রাম রমেশ বলেন, একমাত্র তৃণমূল বাদে সবাই লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার পক্ষে রয়েছে। তৃণমূল পরে তাদের মত জানাবে, তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে। এরপর ঘরোয়াভাবে বিভিন্ন বিরোধী নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলে। ডেরেকও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ঘরোয়াভাবে জানান, এ ব্যাপারে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কোনো আপত্তি নেই।

তৃণমূলের ধারণা ছিল, বুধবার সকালে বৈঠকে বসে বিষয়টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে 'সিলমোহর' লাগানো হবে এবং নিয়মানুযায়ী (অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিতে হয় সকাল ১০টার আগে) পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে তা জমা দেওয়া হবে সর্বসম্মতিক্রমে।

কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী যখন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন, বুধবারই অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ছে।

বুধবার সকালে বিরোধীরা বৈঠকে বসার পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তৃণমূলকে জানানো হয়, আর অপেক্ষা না করে গৌরব গগৈকে দিয়ে তারা সই করিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব স্পিকারের অফিসে জমা দিয়ে দিয়েছেন। কারণ ১০টার বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করতে হলে আরও একদিন পিছিয়ে যেত প্রক্রিয়া। এই ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুদীপ। তার বক্তব্য, তারা জানতেও পারলেন না অথচ অনাস্থা প্রস্তাব চলে গেল স্পিকারের কাছে। কে সেই প্রস্তাবে সই করলেন, সেটাও তৃণমূল জানল পরে। সঙ্গে সঙ্গেই মৌখিকভাবে ক্ষমা চায় কংগ্রেস।

কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ জানান, এই ঘটনার জন্য তারা ক্ষমা চাইছেন এবং তারা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তার বক্তব্য, প্রথম দিনেই সবাই সহমত হয়ে গেলে এই ঘটনা ঘটত না। কিন্তু পরের দিনের বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করতে হলে আরও একদিন বিলম্ব হয়ে যেত।

পাশাপাশি এর পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক সিলমোহরের জন্য অপেক্ষা করা হবে বলেই তৃণমূলকে জানায় কংগ্রেস।

পরে ডেরেক ও তৃণমূলের লোকসভার এমপি সৌগত রায় সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। বরং 'ইনডিয়া' জোটের ঐক্য বজায় রাখতে বারবার তারা বলেছেন, সমন্বয় অত্যন্ত মসৃণ চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে