সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাশে থাকার বার্তা দিতে রাশিয়া ও বেলারুশে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু

ইউক্রেনে টানা ৫৩৮ দিন ধরে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। আর এই রুশ হামলায় সম্পূর্ণরূপে সমর্থন জানিয়ে রেখেছে মস্কোর ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ। এর জেরে বিশ্ব মঞ্চ থেকে একে অপরের ঘনিষ্ঠ মিত্র এই দেশ দু'টিকে এক ঘরে করে ফেলতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও বেলারুশ সফরে গেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে এই দুই দেশের প্রতি বেইজিংয়ের সমর্থনের কথা জানান দিতেই এই সফর। সংবাদসূত্র : আল-জাজিরা

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে মুখপাত্র কর্নেল উ কিয়ানের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার ছয় দিনের সফরে গেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু। এই সময়ে তিনি মস্কোয় আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন এবং রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন।

রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা 'তাস' জানিয়েছে, 'একটি নতুন ধরনের বহুপক্ষীয় ব্যবস্থাকে' শক্তিশালী করাসহ পশ্চিমা পদ্ধতির বাইরে নতুন ব্যবস্থা বিকাশে 'বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর' অনুসন্ধানের বিষয়ে সম্মেলনে বক্তৃতা করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এতে প্রায় ১০০টি দেশ এবং আটটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে 'তাস' বলেছে, সম্মেলনে অংশ নেওয়া এসব প্রতিনিধি 'একটি বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য নিরাপত্তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।'

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, চীন ও রাশিয়ার নেতারা 'বিভিন্ন ইসু্যতে বিভিন্ন উপায়ে কৌশলগত যোগাযোগ বজায় রেখেছেন'। দৈনিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা এবং অভিন্ন উদ্বেগের বিষয়সহ বিস্তৃত বিষয়ে সুশৃঙ্খলভাবে উচ্চ পর্যায়ের মতামত বিনিময় হয়েছে।' ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, 'দুই দেশ চীন-রাশিয়ার ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক এই অংশীদারিত্বকে নতুন যুগে এগিয়ে নিয়ে যাবে।'

উলেস্নখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল। উভয় নেতা সে সময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে 'কোনো সীমা' না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া ইউক্রেন হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার হামলাকে 'আক্রমণ' বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত মার্চ মাসে মস্কো সফর করেছিলেন। সে সময় পশ্চিমা নেতাদের কাছে তিনি যে বার্তা দিয়েছিলেন, তা ছিল- ইউক্রেনে লড়াইয়ের জন্য মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে