রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
বাইডেন-জিনপিং বৈঠক

কিছু মতৈক্য :বিরোধ থেকেই গেল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
শি জিনপিং ও জো বাইডেন

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রেসিডেন্সিয়াল হটলাইন ও সামরিক যোগাযোগ ফের শুরু করতে এবং ফেন্টানাইলের উৎপাদন রোধে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। এতে এক বছরের মধ্যে দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি বৈঠকে বাস্তব অগ্রগতি ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে মতৈক্য হলেও বিরোধ থেকেই গেল। বুধবার চার ঘণ্টা ধরে কথা বলেছেন দুই দুই নেতা। সংবাদসূত্র : এপি, এএফপি, রয়টার্স

বাইডেন জানিয়েছিলেন, এই বৈঠকের আসল উদ্দেশ্য হলো, একে অপরকে ভালো করে জানা ও বোঝা। আর তার জন্য মুখোমুখি বৈঠকের কোনো বিকল্প নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এটাও জানিয়েছেন, অতীতে তিনি ও জিনপিং সব সময় যে একমত হয়েছেন, এমনটা নয়। এই বৈঠকের পরেও তাইওয়ান নিয়ে মতভেদ থেকে গেছে। তবে দুই দেশ সামরিক পর্যায়ে আলোচনা শুরুতে সম্মতি দিয়েছে।

সান ফ্রান্সিসকোর ঠিক বাইরে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের শেষে বাইডেন বলেছেন, তাদের মধ্যে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ বাইডেন লিখেছেন, 'শি জিপিংয়ের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে, তাকে আমি সত্যিকারের মূল্য দিই। আলোচনা অনেকখানি এগিয়েছে।'

বাইডেনকে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়ছিল, শি জিনপিং কি একজন ডিক্টেটর বা একনায়ক? বাইডেনের জবাব ছিল, 'আসলে তিনি তাই। মানে আমি বলতে চাইছি, তিনি এই অর্থে ডিক্টেটর যে, তিনি যে দেশ চালান, সেটা কমিউনিস্ট দেশ। সেখানে সরকারের ধরন আমাদের থেকে একেবারেই আলাদা।' এর আগেও বাইডেন এই ধরনের মন্তব্য করেছেন এবং বেইজিং তার তীব্র প্রতিবাদও করেছে।

ইসরাইল নিয়ে আলোচনা

এক মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদিকদের বলেছেন, বাইডেন ও জিনপিংয়ের মধ্যে আলোচনায় ইসরাইল-হামাস প্রসঙ্গও উঠেছিল। বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করেছেন, ইরান যেন কোনো রকম উসকানিমূলক কাজ না করে তা যেন চীন নিশ্চিত করে।

চীনের সরকারি কর্মকর্তারা আমেরিকার সরকারি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তারা ইরানের সঙ্গে আলোচনা করছেন। গাজায় যা হচ্ছে, তা যদি মধ্যপ্রাচ্যে আরও ছড়ায়, তাহলে তার ফল ভালো হবে না বলেও তারা ইরানকে জানিয়েছেন।

সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়বে

দুই দেশের মধ্যে সামরিক পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বাইডেন ও জিনপিং একমত হয়েছেন। শি জিনপিং জানিয়েছেন, তিনি ও বাইডেন উচ্চপর্যায়ে সামরিক আলোচনা শুরু করতে একমত হয়েছেন। এই আলোচনা হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমতার ভিত্তিতে। এআই বা কৃত্রিম মেধা নিয়েও একটি যৌথ সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ার্কিং গ্রম্নপ গঠন করা হয়েছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে বলেছেন, 'এই বিশ্বটা অনেক বড়। এখানে আমেরিকা ও চীন দু'জনেই সফল হতে পারে।' তিনি বলেছেন, 'চীন আমেরিকাকে ছাপিয়ে যেতে বা তাদের আসন ছিনিয়ে নিতে চায় না। আমেরিকারও চীনকে দমিয়ে রাখা বা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা উচিত নয়।'

তাইওয়ান নিয়ে আলোচনা

আমেরিকার এক কূটনীতিক সাংবাদিকদের বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো তাইওয়ান। তিনি জানিয়েছেন, শি জিনপিং বলেছেন, চীন চায়, তাইওয়ান শান্তিপূর্ণভাবে তাদের সঙ্গে মিশে যাক। আর যদি জোর করতে হয়, তবে তার শর্ত নিয়ে চীন আলোচনা করতে রাজি।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'জিনপিং বাইডেনকে বলেছেন, আমেরিকা যেন তাইওয়ানের হাতে আর অস্ত্র তুলে না দেয়। তারা যেন তাইওয়ানের শান্তিপূর্ণভাবে চীনের সঙ্গে মিশে যাওয়াকে সমর্থন করে।'

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, 'শি জিনপিং বলেছেন, তারা তাইওয়ানের ওপর ব্যাপক কোনো অভিযান করছেন না। তারপরও আমেরিকা এই বিষয়ে তাদের মনোভাব বদল করেনি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে