শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর উদ্যোগ নিন

পাটজাত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি

নতুনধারা
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যতই দিন যাচ্ছে দেশে পাটজাত পণ্যের চাহিদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেবল দেশে নয়- বিদেশেও এর কদর বাড়ছে। পাটের তৈরি নানা ধরনের ব্যাগ, পার্টস, জুতা, পুতুল, ম্যাট, শতরঞ্জি, শিকা, পাপোশ, সুতা,, ল্যাম্পশেড, টুপি, চাবির রিং, মানিব্যাগ, ক্যালেন্ডার, কম্বল, পাট ও পস্নাস্টিকের সমন্বয়ে তৈরি ফাইবার গস্নাসসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য তৈরি হচ্ছে। বিদেশে এসব রপ্তানি হচ্ছে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, সরকার পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। পাটকল বন্ধ করায় পাটপণ্যের চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া হলে, তা কর্মসংস্থান, শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য হবে মহা ক্ষতিকর।

এটা সত্য, করোনাভাইরাস মহামারির ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশেও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে। এসএমই শিল্পে এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে। গার্মেন্টস খাতের উৎপাদন পুরোদমে হয়নি। ফলে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের বেশিরভাগ এখন পাঁচটি মেঘা প্রকল্পে নিয়োজিত। যেসব প্রকল্পে তিন লাখ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে; কিন্তু সেখানে মাত্র দেড় হাজার লোকের কর্মসংস্থান আছে। নতুন কোনো কলকারখানা হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ আর দেশে নেই। করোনার কারণে সারা বিশ্বে অনেক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু করোনা বাংলাদেশের পাটশিল্পের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছিল। করোনা পরবর্তীকালে পাটজাত পণ্যের চাহিদা যে পরিমাণ বেড়েছে, তা উৎপাদন এবং সরবরাহের সক্ষমতা একমাত্র বাংলাদেশের রয়েছে। এটা আমাদের বিরাট এক সম্ভাবনার জায়গা ছিল। এমন সময় পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া জাতির জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

উলেস্নখ্য, জুলাই মাস থেকে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো বন্ধ। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তিন মাসের মধ্যে কারখানাগুলো চালু করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারখানা চালুর কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এত বড় একটি জাতীয় শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বর্তমানে একমাত্র পাটশিল্পে ৬ মাসে দেড় লাখ লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। বর্তমানে ৯ হাজার কোটি টাকার পাটপণ্য বিদেশে রপ্তানি হয়। আগামী এক বছরের মধ্যে বার্ষিক ২০ হাজার কোটি টাকার পাটজাত পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পাটবীজে কৃষকদের আগ্রহী করতে ও কৃষকরা যাতে চাষ করে লাভবান হয় সেজন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, দেশে পাটবীজ উৎপাদনের মূল সমস্যা হলো অন্য ফসলের তুলনায় কম লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা চাষ করতে চায় না। এজন্য অন্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। পাটবীজের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা প্রত্যাশিত নয়। পাটবীজ ও পাটের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পাট চাষকে এদেশের চাষিদের কাছে লাভজনক ফসলে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য পাটের অসাধারণ ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য পাটকল চালু করার বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে