শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার প্রণোদনা কর্মসূচি

সুষ্ঠু বাস্তবায়ন হোক
নতুনধারা
  ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

করোনার প্রভাবে সারা বিশ্বই বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মুখোমুখি। বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশেও করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই নানা ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির কারণে নেতিবাচক অবস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে। এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাপনেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। আর এমতাবস্থায় করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় প্রণোদনার বিষয়টি যখন সামনে আসছে- তখন তা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতি সচল রাখতে আরও নতুন দুটি প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন দিয়েছে সরকার যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, নতুন এ প্রণোদনা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে গতি সঞ্চার, গ্রামীণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র বয়স্ক ও বিধবাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। আর এজন্য ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তথ্য মতে, রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এ দুটি প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন করেছেন। যার বাস্তবায়ন দ্রম্নত শুরু হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে যেভাবে বিভিন্ন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে- সেক্ষেত্রে দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে গতি সঞ্চার, গ্রামীণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র বয়স্ক ও বিধবাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে এ প্রণোদনা অত্যন্ত সহায়ক হবে। এখন সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

প্রসঙ্গত এটাও উলেস্নখ্য, করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় নতুন অনুমোদিত এ দুটিসহ মোট প্রণোদনা প্যাকেজের সংখ্যা হলো ২৩টি। এর মোট আর্থিক পরিমাণ ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে এ দুটি নতুন প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন তা অবশ্যই কার্যকর হবে। এবং নতুন এ দুটি প্রণোদনার মাধ্যমে আমাদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী অত্যন্ত উপকৃত হবে। পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতিতেও আরও গতি সঞ্চার হবে। আমরাও চাই এ উদ্যোগের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন যেন নিশ্চিত হয়- আর সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখুক। কেননা, করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে অর্থনীতিসহ সামগ্রিক খাতগুলোকে সচল রাখতে ও গতি সঞ্চার করতে প্রণোদনা অত্যন্ত জরুরি।

জানা গেছে, নতুন অনুমোদিত প্রথম প্যাকেজটির আকার ১৫০০ কোটি টাকা, যার আওতায় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাত ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য গৃহীত কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। আর এ লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থাকে (বিসিক) ১০০ কোটি টাকা এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে এনজিও ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি টাকা, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি টাকা, পলস্নী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে ১০০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ পলস্নী উন্নয়ন বোর্ডকে ৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। অনুমোদিত দ্বিতীয় প্যাকেজের আওতায় ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের ১৫০টি উপজেলায় দরিদ্র সব বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ভাতার আওতায় আনা হবে।

আমরা বলতে চাই, করোনাকালীন সামগ্রিক সংকটকে আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। আর এ লক্ষ্যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও প্রণোদনা প্যাকেজের যাবতীয় দিক আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে। করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতি সচল রাখতে আরও নতুন যে দুটি প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন এলো, এর সঠিক বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে