শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিত্যপণ্যের দাম

যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

নানান অজুহাত সামনে রেখে বাজার অস্থির হওয়ার বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি নানা কারণেই নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিও আলোচনায় আসে। অথচ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নিম্নআয়ের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে আবারও বেড়েছে সরু চালের দাম। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, গত সপ্তাহে চাল আমদানি ও বাজার দাম পরিস্থিতি নিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠকের পর নতুন করে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। তবে অন্য চাল আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বলেও খবরে ওঠে এসেছে।

আমরা বলতে চাই, এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০০ টাকা বৃদ্ধি এবং বেড়েছে সরু চালের দাম- এই বিষয়টি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। কেননা দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বাজারে অস্থিরতা থাকলে তার প্রভাব পড়ে জনসাধারণের মধ্যে। উলেস্নখ্য, চালের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি চাল কম এসেছে। আবার আমন মৌসুম শেষ পর্যায়ে। দুই মাস পরে বোরো মৌসুমের ধান উঠবে। এ কারণে এখন চালের দাম কমেনি। উল্টো সরু চালের দাম বেড়েছে। ফলে সামগ্রিক বিষয় আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এমনটি কাম্য।

লক্ষণীয়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, সরু চালের দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সরু চালের মধ্যে মিনিকেট এখন ৬২ থেকে ৬৬ টাকা ও নাজিরশাইল ৬২ থেকে ৭০ টাকা। মৌসুমের শেষ সময়ে নাজিরশাইল চালের কেজিতে ৪ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া মাঝারি চাল ৫০ থেকে ৫৬ টাকা ও মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। দেশি, লেয়ার ও সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে বাজার ঠিক রাখতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই।

জানা গেছে, নির্ধারিত দামে সব ভোজ্যতেলও বিক্রি হচ্ছে না। কিছু দোকানে নির্ধারিত দরে খোলা তেল বিক্রি হলেও এখনো বেশির ভাগ দোকানে বাড়তি দাম নিচ্ছে। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেল নির্ধারিত দরে বিক্রিতে ফিরছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ৫ টাকা কমেছে। কিন্তু আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি নতুন রসুন মিলছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। এছাড়া বাজারে আলু, টমেটো, শিম, বেগুন, মুলার কেজি এবং প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপিসহ বেশির ভাগ সবজি ১০ থেকে ২০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, সোনালি মুরগির দাম বৃদ্ধি, বেড়েছে সরু চালের দাম, এ ছাড়া অন্য চাল আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে- এই বিষয়গুলো এড়ানোর সুযোগ নেই। মনে রাখা দরকার, দাম বৃদ্ধির বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। সীমিত ও নিম্নআয়ের মানুষ এমনিতেই পরিবারের সব ব্যয় মেটাতে হিমশিম খায়। এ ছাড়া দরিদ্র পরিবারের অনেকে ঋণ করেও নিত্য-নতুন ব্যয় মেটাতে বাধ্য হন। এ অবস্থায় যদি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায় তবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয় অনুমান করা কঠিন কিছু নয়। ফলে সার্বিক বিষয় আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। যত দ্রম্নত সম্ভব বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া; একইসঙ্গে বাজার সহনীয় রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখা অপরিহার্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে