শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চালের দাম বৃদ্ধি বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

নতুনধারা
  ০৪ মার্চ ২০২১, ০০:০০

আরেক দফা বেড়েছে চালের দাম। এবার খুচরা বাজারে কেজিতে বেড়েছে দুই থেকে চার টাকা। চাল আমদানি করেও কেন চালের দাম বাড়ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। দিন কয়েক আগে চাল ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেছিলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন সুযোগ না নেয়, সেজন্য জনমত সৃষ্টি করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে ভোজ্যতেলের দাম বেঁধে দেয়ার পরও তা মানছে না ব্যবসায়ীরা।

চালের যথেষ্ট মজুত না থাকায় দেশে চালের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের এই তথ্য ঠিক নয়। ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টন করে তিনটি কনসাইনমেন্টের এলসি ওপেন করে দিয়েছে, আরও দুটি ওপেন করার কথা। সরকারিভাবে চাল আমদানি কার্যক্রম তদারকির জন্য অস্থায়ীভাবে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। সোমবার এই সেল গঠন করে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। তিন সদস্যের এই সেলের প্রধান করা হয়েছে খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানকে। এছাড়া সহযোগী প্রধান হিসেবে আছেন সহকারী উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল মালেক খন্দকার এবং সহযোগী হিসেবে উচ্চমান সহকারী মো. বায়জিদ খান। অফিস আদেশে বলা হয়, চাল আমদানির জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে চুক্তির আওতায় জাহাজ/বার্জের নামসহ জাহাজীকরণ করা ও জাহাজীকরণের অবশিষ্ট চালের পরিমাণ সংগ্রহ করবে এই সেল। এছাড়া, চট্টগ্রাম ও মোংলার চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরবরাহকারীভিত্তিক চালের আগমন, খালাস ও ভাসমান পরিমাণের তথ্যও সংগ্রহ করবে। এসব বিষয়ে ছক অনুযায়ী খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এই সেল প্রতিদিন প্রতিবেদন দেবে বলেও আদেশে উলেস্নখ করা হয়েছে। এরপরও যদি চালের দাম বাড়ে তা সত্যিই দুঃখজনক।

\হআরেক দফা চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এটা অতি মুনাফাখোর ও লোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজি। তারা একেক সময় একেক অজুহাত তুলে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা কখনোই ক্রেতাদের স্বার্থ বিবেচনা করে না। বিক্রেতাদের অভিমত 'আমরা বেশি মূল্য দিয়ে কিনলে কম মূল্যে বিক্রি করব কীভাবে?' বেশি মূল্য দিয়ে কিনেছে নাকি কম মূল্য দিয়ে তাদের এ বক্তব্য কি প্রমাণ সাপেক্ষ? তারা যে অজুহাত তুলেছে এ অজুহাত অত্যন্ত পুরানো।

মনে রাখতে হবে, চালের দাম বেড়ে গেলে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ভোজ্যতেলের দামও। কারণ এ দুটি পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। করোনাকালে এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং দুই বছর আগে পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চাল-তেলের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, প্রচুর লেখালেখি হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চাল-ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে