শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকবিরোধী অভিযান

আরও কঠোর হতে হবে
নতুনধারা
  ১২ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

মাদকের বিপজ্জনক বিস্তার রোধে সরকারের নানা উদ্যোগ ও তৎপরতার পরও মাদকের ভয়াবহতা রোধ করা যাচ্ছে না। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। এটা আমাদের জন্য এক বিপজ্জনক বার্তা। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে মাদক বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৩৪ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৪০ পিস ইয়াবা, ১১৩ গ্রাম হেরোইন, ২৪ কেজি ৩৬০ গ্রাম গাঁজা ও ৪৫টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন জব্দ করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে ৪২ জন কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পেয়েছিল সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা এদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে, অনেকটাই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতি ৩ মাস পরপর তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর ওই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও তালিকা তৈরি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই তালিকা ধরেও সমন্বয় করে কাজ করা হয়।

উলেস্নখ্য, দেশব্যাপী মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেন। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের জোরদারের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। উদ্বেগজনক সংবাদ হচ্ছে, বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণনেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে এই মাদক। খবরে প্রকাশ, বাংলাদেশঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সে সব কারখানায় কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। অবাক করার ব্যাপার, মিয়ানমারের মানুষ, সেখানকার যুবসমাজ খুব একটা ইয়াবা আসক্ত নয়। কোনো কোনো এলাকায় ইয়াবা কী তা সেখানকার অধিবাসীরা জানেন-ই না। মূলত বাংলাদেশিদের জন্যই সেখানে ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। এটা দেশের বিরুদ্ধে এক ধরনের ষড়যন্ত্র। মাদকবিরোধী অভিযান সফল করে এই ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে যে কোনো মূল্যে। অভিযোগ রয়েছে, এ ব্যাপারে সে দেশের সরকারের মৌন সম্মতিও আছে। মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানার কথা আমরা জানি, আমাদের সরকারও জানে; কিন্তু ইয়াবা চোরাচালান রোধ হচ্ছে না কিছুতেই। কেন হচ্ছে না, এটাই এখন বড় প্রশ্ন? এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করা যাবে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পঙ্গু হয়ে যাবে। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে যুবসমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে